গঙ্গাচড়া (রংপুর) প্রতিনিধি॥ রংপুরের গংগাচড়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের দায়িত্বরত আনসার বাহিনীর (ভিডিপি) দলনেতা- দলনেত্রী নিজ কর্মস্থলে মাসের পর মাস অনুপস্থিত থেকেও উপজেলা (ভিডিপি) কর্মকর্তার জোগসাজেসে প্রতি মাসে তাদের সম্মানি ভাতা উত্তোলন করছেন।
কিছুদিন পূর্বে উপজেলার বেতগাড়ী ইউনিয়নের দায়িত্বরত একজন দলনেত্রীর নামে এ বিষয়ে বেতগাড়ি ইউনিয়নবাসীর পক্ষে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শ্রীমতি ভাবনা রানী (দলনেত্রী) তার নিজ ইউনিয়নে অবস্থান না করে শুশুর বাড়ি মিঠাপুকুরে ২বছর যাবত অবস্থান করছে। বিবাহের এই দুই বৎসরে তিনি তার স্বামী পটুয়াখালী জেলায় সরকারি কলেজে প্রভাষক পদে নিয়োজিত থাকায় সেখানেও কিছু মাস অবস্থান করেন। দলনেত্রীর সম্মানী ভাতা নিতে মাঝে মধ্যে আত্বীয় সেজে বাবার বাসায় আসেন এবং উপজেলা আনসার (ভিডিবি) অফিসের টিআই রুহুল এর সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে ছয় মাসের স্বাক্ষর একদিনে করে থাকেন। এছাড়া অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে তিনি বিবাহসূত্রে অন্যস্থানে ২’বছর অবস্থান করার কারণে ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের প্রতিটি ওয়ার্ডে থাকা ৩২ জন সাধারণ সদস্যরা যথাসময়ে ইউনিয়ন দলনেত্রীকে পায়না। তারা সরকারের বিভিন্ন সময়ে উন্নয়ন মূলক কাজ যেমন ভোট বা পূজার দায়িত্ব পালনে অংশগ্রহন করতে ইচ্ছুক হলেও নিজেদের উৎসর্গ করতে পারেনা। বিভিন্ন সময়ে দুর্গাপূজা বা নির্বাচনে কখন কিভাবে লোক নেয়া হয় তারা যথাসময়ে কিছুই জানতে পারেন না।।
উল্লেখ্য দলনেতা-দলনেত্রী নিয়োগে নিজ এলাকার বাসিন্দাদের অগ্রাধিকার থাকলেও উপজেলা আনসার ভিডিবি কর্মকর্তার পছন্দসই নিয়োগকৃত সদস্যরা প্রায় সময় নিজ এলাকার বাহিরে অবস্থান করেন। তাদের প্রতিমাসে একবার উপজেলার মাসিক মিটিং এ উপস্থিত থেকে সম্মানী ভাতা উত্তোলনের কথা থাকলেও অফিসের টিআই এর মাধ্যমে আর্থিক ও অনৈতিক সুবিধার বিনিময়ে ভাতার টাকা তাদের কাছে পৌঁছে দেয়া হয় বলেও অভিযোগ উঠেছে।
সরেজমিনে গিয়ে বেতগাড়ী ইউনিয়নে ভাবনা রানীর অনুপস্থিতিসহ একই ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা দলনেতা আব্দুল হাদী’র বাহিরে থাকার সত্যতা পাওয়া যায়। এছারা বড়বিল ইউনিয়ন দলনেতা মশিয়ার রহমান এর অন্যস্থানে অবস্থানসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে দেখা যায় একই চিত্র। আনসার দলনেতা-দলনেত্রী নিজ এলাকায় মাসের পর মাস অনুপস্থিত। তারা নিজ এলাকায় না থাকায় সাধারণ মানুষ আনসার (ভিডিপি) অফিস কতৃক খবরগুলো ঠিকসময়ে পাচ্ছে না। সাধারণ সদস্যদের অনেকেই জানান অফিসের খবরগুলো পেতে তাদের ভোগান্তি পোহাতে হয়।
মোবাইল ফোনে কথা হলে ভাবনা রানী তার অভিযোগের বিষয়ে বলেন, (অফিসার) আনসার ভিডিবি কর্মকর্তা সবকিছু জানেন। আমি তাদের সাথে কথা বলেই ছুটি নিয়ে এখানে থেকে অফিসের কাজ করি। আপনি শুধু আমাকে বলতেছেন কেন, উপজেলার সকল দলনেতা ও দলনেত্রীর খোঁজ নিয়ে দেখেন নিজ কর্মস্থলে কতজন আছে ? অন্যদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে তাদের পাওয়া যায়নি।
আনসার (ভিডিপি) টিআই রুহুল আমিন বলেন, আমার সাথে ভাবনার কোন অর্থনৈতিক লেনদেন নেই। তিনি মাসে একবার এসে সাক্ষর করে যান।
উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা রেজেকুজ্জামান ভাবনা রানীর বিষটির সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ভাবনা রানী’র নিয়োগ বিয়ে’র আগে হয়েছে। এলাকায় না থাকলেও সে প্রতিমাসে এসে মিটিং করে। তার কাছে মিটিং এর স্বাক্ষরকৃত হাজিরা খাতা দেখতে চাইলে, তিনি তা দেখাতে অনীহা প্রকাশ করেন।