সবুজ মিয়া গঙ্গাচড়া রংপুর॥ রংপুরের গঙ্গাচড়ায় গত কয়েকদিন ধরেই শীত বাড়তে শুরু করেছে।কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে পুরো উপজেলা, মধ্যদুপুর পর্যন্ত দেখা মেলছেনা সূর্যের। উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের উপর দিয়ে তিস্তা নদী প্রবাহিত থাকায় কুয়াশা আর হিমেল বাতাসের কারণে শীত বাড়ায় বিপাকে পড়েছে এ অঞ্চলের খেটে খাওয়া দিনমজুর ও নদী পাড়ের সাধারণ মানুষ। ঘন কুয়াশার কারণে দিনের বেলাতেও হেডলাইট জ্বালিয়ে সড়কে চলাচল করছে যানবাহন।
গত বুধবার থেকেই গঙ্গাচড়া উপজেলার আশপাশের এলাকায় কুয়াশা বাড়তে শুরু করেছে। দিনের অনেকটা সময় দেখা মেলছেনা সূর্যের। গতকাল শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) বেলা ১২ টার পরও সূর্যের আলোর দেখা মিলেনি।
গঙ্গাচড়া উপজেলার চর নোহালী এলাকার বাসিন্দা গণমাধ্যমকর্মী মো: সানজিম মিয়া বলেন, গত দু’দিন ধরেই প্রচণ্ড শীত পড়েছে, প্রতিদিন শীত বেড়েই চলছে। এছাড়া শৈত্যপ্রবাহ বইছে। রাতে বৃষ্টির মতো ফোটা ফোটা শীত পড়ছে। আগে সকাল বেলা উঠতে পারলেও, এখন শীতের কারণে সকালে উঠতে পারছি না। আর শীত বাড়ায় গোটা উপজেলায় শিশু থেকে বয়ো-বৃদ্ধদের সর্দি-কাশি জনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতাও ব্যাপক বেড়েছে ।
শীত ও কুয়াশায় বেড়েছে সাধারণ মানুষের কষ্ট, মাহেন্দ্র চালক মিষ্টার মিয়া ও অটোচালক আবুল কালাম বলেন, শীতের পাঁশাপাশি প্রচণ্ড ঘন কুয়াশা শুরু হওয়ায় স্বাচ্ছন্দে গাড়ি যে চালাবো তা কষ্টকর হয়ে উঠেছে। এতই কুয়াশা পড়ছে, যে সন্ধার পর হেডলাইট জ্বালিয়েও পাঁচ হাত দূরে কি আছে, তা দেখা যাচ্ছে না। এতে করে ধীরে ধীরে চালাতে হচ্ছে, এ কারণে সময় যেমন বেশি লাগছে, তেমনি দুর্ঘটনার আশঙ্কাও তৈরি হচ্ছে।
গঙ্গাচড়া হাটে সবজি নিয়ে আসা চাষি মজিবর হোসেন বলেন, শীতকালে খুব কষ্ট। সকাল বেলা উঠে জমি থেকে সবজি তুলে সেগুলো ধুঁয়ে হাটে নিয়ে আসতে হয়। এতে ঠাণ্ডা লেগে অসুখ-বিসুখ বাড়ছে।
দিনের বেলাতেও হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করা পরিবহন ভ্যানচালক মজমুল বলেন, প্রতিদিন সকাল থেকে রাত অবধি ভ্যান চালিয়ে যা আয় হয় তা দিয়ে সংসার চলে। কিন্তু গত দু’দিন ধরে যে শীত পড়েছে, এতে করে সড়কে মানুষের উপস্থিতিও কমে গেছে। এ কারণে ইনকামও কমে গেছে। ঘন কুয়াশায় ঠিকমতো রাস্তাঘাট দেখা যাচ্ছে না।
৪ নং ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মাজহারুল ইসলাম লেবু বলেন গঙ্গাচড়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৩ টি ওয়ার্ড নদী বিস্তৃত এখানে বসবাসরত মানুষগুলো শীতকাল আসলে শীত নিবারণের গরম কাপড়সহ নানান সমস্যার সম্মুখীন হয়। সরকার যে পরিমান ত্রান সামগ্রী বরাদ্দ দেন তা অতি নগন্য তাই তিনি শীতে কর্মহীন মানুষগুলোর জন্য পর্যাপ্ত পরিমান খাবার ও কম্বল বরাদ্দের জন্য মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, বায়ুমণ্ডলের উপরিভাগে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার কারণে ঘন কুয়াশা হচ্ছে। এটি সামনে আরো বেশ কিছুদিন স্থায়ী হবে। গত কয়েকদিন থেকে এই অঞ্চলে সর্বনিম্ন ১১ থেকে ২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বিরাজ করছে। তবে জানুয়ারীর মাঝামাঝি তাপমাত্রা আরও কমে ৮-১০ বা এর কাছাকাছি থাকবে বা এর নিচেও নামতে পারে বলে জানান।