আল আমিন (বাবু), লালমনিরহাট: লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলায় জীবিত গাছকে ‘মরা’ দেখিয়ে নিলাম আহ্বানের ঘটনাটি প্রকাশের পর স্থগিত করা হয়েছে। উপজেলা পরিষদের মালিকানাধীন শিশু পার্ক চত্বরসহ উপজেলা চত্বরে থাকা ২৪টি মূল্যবান গাছকে ঝড়ে মাথা ভেঙে পড়া ও মৃত দেখিয়ে গত ২৪ সেপ্টেম্বর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের ওয়েবসাইটে নিলাম বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।
১৩৪২ নং স্বারকে উপজেলা প্রশাসক জাকিয়া সুলতানা স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে জারুল, মেহগনি, আকাশমনি, শিশু, কড়ই, শিমুল, কাঠাল ও পিতরাজ প্রজাতির গাছ নিলামের কথা উল্লেখ ছিল। সিডিউল বিক্রির শেষ তারিখ নির্ধারণ করা হয় ৯ অক্টোবর পর্যন্ত, আর দাখিলের সময়সীমা ১৩ অক্টোবর দুপুর ১টা পযর্ন্ত।
অভিযোগ উঠেছে—নিয়ম না মেনে সিন্ডিকেট করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক আরিফুল ইসলাম সিডিউল বিক্রি শুরু করেন। যদিও তিনি উপজেলা পরিষদে কর্মরত নন। ওই সময় উপজেলা পরিষদের সিএ হাবিবুর রহমানকে অন্যত্র কাজে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ঘোষিত ২৪টি গাছের বেশিরভাগই সম্পূর্ণ জীবিত ও সবল। শিশু পার্কের এসব গাছ কেটে ফেলা হলে পার্কের ছায়াশীতল পরিবেশ নষ্ট হবে বলে আশঙ্কা স্থানীয়দের। পার্কে ঘুরতে আসা রুবেল ও রুম্মান নামের দুই যুবক বলেন,“সব গাছই জীবিত। মরা নয়। এগুলো কেটে ফেললে কেউ আর এখানে আসবে না।”
একজন স্থানীয় সংবাদকর্মী তার ফেসবুক ওয়ালে বিষয়টি তুলে ধরলে জেলা প্রশাসনের নজরে আসে ঘটনাটি এরপরই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রশাসক জাকিয়া সুলতানা স্বাক্ষরিত নতুন ১৪৩৬ নং স্বারকে ‘অনিবার্য কারণবশত’ গাছ নিলাম বিজ্ঞপ্তিটি স্থগিত ঘোষণা করা হয়। তবে স্বারকে স্থগিতের কোনো কারণ বা পরবর্তী কোন সময় নিলাম হবে তা উল্লেখ করা হয়নি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকিয়া সুলতানা জানান, “গাছগুলো মরা ছিল বলেই জেলা প্রশাসকের অনুমোদনে নিলাম আহ্বান করা হয়েছিল। জীবিত গাছ নিলাম দিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষে জীবিত গাছ কর্তনের নিয়ম থাকলেও সেটি অনুসরণ করা হয়নি।
এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদের সিএ হাবিবুর রহমানের নিকট প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন….স্যার কর্মবন্টন করে দিয়েছেন। সেখানে আমাকে যদি আমার কাজ না অন্য কাজ করে বেতন দেয় তাহলে আমার সমস্যা কোথায়। আমাকে যে কাজ দিয়েছে সে কাজ করেই আমি বেতন উত্তোলন করি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অফিস সহায়ক কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক আরিফুল ইসলামকে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, আমি উপজেলা প্রশাসনের লোক আমাদের যখন যেখানে দেয় আমরা সেখানেই কাজ করি। কালীগঞ্জে আমার যোগদান তিনমাস আর উপজেলা পরিষদের দায়িত্ব আমার কাছে একমাস ধরে বলে জানান তিনি।




















