নিজস্ব প্রতিবেদক বাবলু মিয়া॥ ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বামোনাইল গ্রামের থেকে নাটোপাড়া যাবার রাস্তার দু’ধারের অপরূপ সুন্দর খেজুর গাছ কেটে নিচ্ছেন এলাকার প্রভাবশালীরা। ওই গ্রামের পল্লীমঙ্গল মাধ্যমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন মাঠ হয়ে বামোনাইল মাঠপাড়া দিয়ে নাটোপাড়া যাবার সরকারি রাস্তার খেজুর গাছ গোপনে কেটে ইট ভাঁটায় বিক্রি করছে এলাকার একটি প্রভাবশালী মহল।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এলাকার একশ্রেণীর অসাধু কাঠ ব্যাবসায়ীরা রাস্তার পাশের জমির মালিকের টাকার লোভ দেখিয়ে গাছকাটার উৎসাহ প্রদান করছে। শীতের সকালে ঘন কুয়াশার মধ্যে ও গভীর রাতে প্রাকৃতিক ভাবে তৈরি হওয়া রাস্তার এসব খেজুর গাছ কেটে সাবাড় করছে কাঠ ব্যাবসায়ীরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় স্থানীয় ঝিথড় গ্রামের কাঠ ব্যাবসায়ী সাইফুল ১০ থেকে ১২ জন শ্রমিক লাগিয়ে খেজুর গাছগুলো কেটে নিচ্ছেন। গাছকাটার বিষয়ে সাইফুল জানান, কাঁচা রাস্তা পাকা হবার টেন্ডার হবার কথা হয়েছে। সেজন্য রাস্তার পাশের জমির মালিক কুশাবাড়িয়া গ্রামের রিয়াজ কবিরাজের কাছ থেকে ও আশপাশের জমির মালিক বিধান ও আহমেদ এর কাছ থেকে টাকার বিনিময়ে এসব গাছ কিনে নিয়ে সে কাটছেন। আপনারা জমির মালিকের সাথে কথা বলেন আমার সাথে কথা বলে কোন লাভ নেই। তবে গাছ কাটার কোন অনুমতি পত্র তাঁরা কেউ দেখাতে পারেনি।
সরকারি রাস্তার গাছ বিক্রির বিষয়ে, জমির মালিক রিয়াজের কাছে জানতে চাইলে সে জানান, গাছগুলো সরকারি রাস্তার তবে আমার জমির পাশে হওয়াতে গাছের ডালপালা পড়ে আমার ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। এজন্য আমি গাছগুলো বিক্রি করে দিচ্ছি ইটভাটায়। এছাড়া গাছ বিক্রির বিষয়ে অপর দুই ব্যক্তি আহমেদ আর বিধানের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাদের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
এদিকে রাস্তার পাশের খেজুর গাছ বিক্রি করার বিষয়ে এলাকার একাধিক স্কুল, কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, খেজুর গাছ পরিবেশের প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করে। এখানে পাখিরা বাসা বাঁধে। খেজুরের রস ও গুড় খেতে খুবই সুস্বাদু। এই গাছ গুলো আমাদের গ্রামের সম্পদ। তাই অতি দ্রুত এই গাছ গুলোকে রক্ষা করা হোক।
এদিকে সরকারি টেন্ডার বিহীন গাছ বিক্রি করা আইনগত কোন বিধান নেই বলে জানান এলাকার সচেতন মানুষ।
গ্রামীণ রাস্তার পাশের খেজুর গাছ কাঁটার বিষয়ে ফুরসন্দি ইউনিয়নের উপ-সহকারি ভূমি কর্মকর্তা শংকর কুমার বিশ্বাসের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাস্তার গাছকাটা আইনগত অপরাধ। আমি সাংবাদিকের কাছ থেকে জানতে পেয়েই ঘটনাস্থলে গিয়ে গাছ গুলো জব্দ করার ব্যাবস্থা নিয়েছি। কালকের মধ্যেই আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে সহকারী কমিশনার ভূমি শারমিন আক্তার সুমি ও ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাহি অফিসার সাদিয়া জেরিনকে মুঠোফোনে জানানো হলে তাঁরা আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।