রতন দে, মাদারীপুর প্রতিনিধি : মাদারীপুরের ডাসারে সৈয়দা শান্তি নাহার (৭০) নামে এক বৃদ্ধা মায়ের সম্পত্তি ও ব্যাংকে থাকা অর্থ হাতিয়ে নিয়ে তাকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেয় তার বড় সন্তান সৈয়দ জানে আলম স্বপন। এই ঘটনায় বৃদ্ধা সৈয়দা শান্তি নাহার ছেলেকে আসামী করে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন।মায়ের দায়ের করা সেই মামলায় সন্তান এখন কারাগারে ।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে, সৈয়দা শান্তি নাহার নামে ওই বৃদ্ধার স্বামী বছর তিনেক আগে মারা গিয়েছে। ওয়ারিশ হিসেবে রেখে গেছেন, তিন সন্তান এক মেয়ে। স্বামীর মৃত্যুর পরে চিকিৎসা জনিত কারণে মাদারীপুর শহরে তার বড় ছেলের বাড়ীতে থাকে। নগদ টাকার প্রয়োজনে ৫২লক্ষ টাকার জমি বিক্রি করেন। সেই টাকা বড় সন্তানের কাছে গচ্ছিত রাখেন। কিছুদিন পরে সে অসুস্থবোধ করলে চিকিৎসার কথা বলে তার বড় সন্তান সৈয়দ জানে আলম স্বপন ও তার স্ত্রী কাজী শিবলী আক্তার রুমা এবং তার সস্তান সৈয়দ রাহুল আলম শুভ অজ্ঞাত একটি বিল্ডিং ঘরে নিয়ে যায়। এসময় হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে বলে কিছু প্রয়োজনীয় কিছু কাগজ পত্র সই করিয়ে নেয়। এর কিছুদিন পরে জানতে পারেন তার বাড়ীর তিন শতাংশ জমি হেবা দলিলের মাধ্যমে বড় সন্তান জানে আলম তার নামে লিখে নেন। এছাড়াও বিভিন্ন স্থানের তার একাধিক সম্পত্তি প্রতারণা করে অন্যদের দলিল করিয়ে দেন। বিষয়টি জানার পরে তার বড় ছেলের কাছে জমি বিক্রির টাকাসহ মোট ৭১ লক্ষ টাকা এবং তিন শতাংশ জমি ফেরত চাইলে টাকা ও জমি ফেরত দিতে অস্বীকার করে। পরে মামলা করার হুমকি দিলে সৈয়দ জানে আলম স্বপন বৃদ্ধা শান্তি নাহারকে এলোপাতাড়ি কিল ঘুষি ও লাথি মেরে ঘর থেকে বের করে দেয়।ঘটনার পরে তার মেজ ছেলে সৈয়দ মুক্তি তার মাকে উদ্ধার করে চিকিৎসা করেন।এনিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ পেলে এলাকাজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে।স্থানীয়রা অভিযুক্ত সন্তানের শাস্তি দাবী করেন।
ভুক্তভোগী সৈয়দা শান্তি নাহার বলেন, প্রতারণার মাধ্যমে আমার ছেলে সৈয়দ জানে আলম ও তার স্ত্রী কাজী শিবলী আক্তার রুমা জায়গাজমি অর্থ সম্পদ আত্মাসাৎ করে, আমাকে মারধর করে ঘর থেকে বের করে দেয়।ঘটনার পরে আমি আদালতে মামলা করি।সেই মামলায় আমার বড় ছেলে সৈয়দ জানে আলম স্বপন এখন কারাগারে।আমার টাকা পয়সা, জায়গা -জমি ফেরত চাই।আমার ছেলে তা ফিরিয়ে দিলে আর কোন অভিযোগ থাকবে না।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত সৈয়দ জানে আলম স্বপনের ছেলে সৈয়দ রাহুল আলম শুভকে একাধিকবার ফোন দিয়েও পাওয়া যায় নি।
মাদারীপুর জেলার সিনিয়র আইনজীবী এ্যাডভোকেট আব্দুল হাসানাত সোহেল বলেন,মা’কে তার সন্তান সম্পত্তি লিখে নিয়ে ঘর থেকে বের করে দিবে।এটা কোন ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।আশাকরি বিজ্ঞ আদালতে ন্যায় বিচারের মাধ্যমে মা তার নায্য অধিকার ফিরে পাবে।