
সোহরাব হোসেন, ঢাকা:
সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে টানা অবরোধে মহাখালী, গুলশান, বনানী এলাকাটাকে অচলাবস্থা করে ফেলল। গোটা শহরটাকে পড়তে হলো ধীরগতির মধ্যে। দায়িত্বশীলদের কেউই তাদের বুঝিয়ে রাজপথ থেকে ঘরে ফেরাতে পারলেন না এটা অত্যন্ত দুঃখজনক! দুঃখজনক হলেও সত্যি এই দেশে সত্যি কথা বলা নেহাত অপরাধ! জানি আমার এই লেখাতে অনেকেই অসন্তোষ প্রকাশ করতে পারেন।
এদেশে সবাই নিজ নিজ স্বার্থ নিয়ে ব্যস্ত। আচ্ছা মানলাম তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে গেল, আজকে যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে আন্দোলন করছে তারা তো একদিন পাস করে চলে যাবে তাহলে এখন যে তারা দিনের পর দিন আন্দোলনের পেছনে হাজার হাজার টাকা খরচ করছে ভবিষ্যতে তাদের এতে স্বার্থ কোথায়? বুদ্ধিসুদ্ধি কম তাই রহস্যটা আমার মাথায় ঢুকতেছে না। মানলাম আপনারা যৌক্তিক দাবির জন্য স্বার্থ ছাড়াই লড়ছেন। কিন্তু মানুষকে কষ্ট দিচ্ছেন কেন? আপনারা সাধারণ মানুষকে আপনাদের সঙ্গে যোগ দিতে আহ্বান জানান। যারা সমর্থন করতে চান আপনাদের পাশে এসে দাঁড়াবে। দয়া করে সবাইকে জিম্মি করবেন না। আপনারা কেন আন্দোলন করছেন দেশের অধিকাংশ মানুষই তা জানে না। অনেকে শুধু এটা জানে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আন্দোলন করতেছে, ব্যাস এতটুকুই। খুব অল্প মানুষই পুরোপুরি জানে। বিশ্ববিদ্যালয় হলে স্বার্থকতা কী সবাইকে বোঝাতে প্রচারণা চালান। সবাই বুঝলে আপনাদের পাশে দাঁড়ালে সবাই চাইলে সরকার মানতে বাধ্য।
সম্মানিত আন্দোলনকারী ভাই/বোনেরা আপনাদের যদি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার এতোই ইচ্ছা থাকে তাহলে আপনারা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি অথবা চান্স পেলেন না কেন? তিতুমীর কলেজে পড়তে আসলেন কেন? এখন আন্দোলন করে পড়ার সময় নষ্ট করছেন কিছুদিন পর অটোপাস চাইবেন। কয়েকমাস আগে আমরা এমন ঘটনাও দেখেছি।
আপনারা তো শিক্ষিত মানুষ, দেশের ভবিষ্যৎ। আপনাদের অন্তত সাধারণ মানুষের ভোগান্তির কথা ভাবা উচিৎ ছিল। সব বাদ দিলাম মহাখালী এলাকায় তিনচারটা সরকারি হাসপাতাল। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এই হাসপাতাল গুলোতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনদের আপনাদের অবরোধের কারণে কী অবস্থা হয়েছে আপনারা সেই চিন্তা করেননি। আপনারা বলতে পারেন আপনারা অ্যাম্বুলেন্স আটকাননি অথবা যাবার ব্যবস্থা করেছেন। মেনে নিলাম। কিন্তু যারা অ্যাম্বুলেন্সে আসেননি তারা তো আটকা পড়া শতশত গাড়ির মধ্যে একটি গাড়িতে আটকা পড়েছিলেন। তারা তো আপনাদের ধিক্কার দিয়েছে।
আপনারা বুদ্ধিজীবী মানুষ তবে কেন আপনারা সাধারণ মানুষের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে আপনাদের দাবি আদায় করবেন? আপনারা বুদ্ধি খাটিয়ে আলাদা কৌশলে সরকারের কাছ থেকে দাবি আদায় করে দেখান। কিছু হলেই অবরোধ এই কৌশল তো সবাই ব্যবহার করছে। আপনারাও সেই পথে হেঁটে কী বোঝাতে চাচ্ছেন? দয়া করে এবার সাধারণ মানুষকে মুক্তি দিন।