
মোঃ আনোয়ার হোসেন (ডিমলা) নীলফামারী :
তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটির ১৭ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপি নীলফামারী, লালমনিরহাট, রংপুর, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধার ১১টি পয়েন্টে দুই দিনব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। তিস্তা মহাপরিকল্পনার দাবিতে তিস্তা পাড়ে ৪৮ ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচি চলবে বিএনপির, জানান আসাদুল হাবিব দুলু।
আগামী সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারী) দুপুর ২টায় এই কর্মসুচির উদ্ধোধন করবেন বিএনপির মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক ও বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু বলেন, “হঠাৎ করে নাকি তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে শুনেছি। তিস্তার ডালিয়া পয়েন্টের ভাটির তিস্তার চরে যেখানে মঞ্চ করা হয়েছে সেখানে নাকি নদীর পানি উঠেছে। তিস্তারপানি কেন বেড়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে আগামী ১৭ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি তিস্তার পানি হিস্যা ও তিস্তা মহাপরিকল্পনার দাবিতে তিস্তা পারে ৪৮ ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচি চলবে আমাদের।”
উত্তরাঞ্চলের তিস্তা নদীতে হঠাৎ উজানের ঢল নামায় শঙ্কায় চরবাসী। সাধারণত শুষ্ক মৌসুমে এমন প্রবল পানির প্রবাহ দেখা যায় না, তবে শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত পানি বাড়তে থাকে। এতে নীলফামারীর তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট বন্ধ রাখার পরও চাপ বেড়ে যাওয়ায় পর্যায়ক্রমে ৩০টি জলকপাট খুলতে হয়েছে।
স্থানীয় কৃষকদের আশঙ্কা, আকস্মিক এই ঢলে বোরো, গম, আলু, মরিচ ও বাদামের মতো ফসল নষ্ট হতে পারে। ঝাড়শিঙ্গেশ্বর চরের বাসিন্দা আছির উদ্দিন এবং চরখড়িবাড়ি গ্রামের আঃ হালিম জানান, শুষ্ক মৌসুমে এমন ঢল আগে কখনো দেখা যায়নি।
আসাদুল হাবিব দুলু আরও জানান, হঠাৎ করে দুপুরের পর শনিবার ভারত পানি ছেড়ে দেওয়ায় ডালিয়ায় অবস্থিত দেশের সর্ব বৃহৎ সেচ প্রকল্পে তিস্তা ব্যারাজ এলাকা সহ ২২টি চরে নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে প্রবেশ করতে শুরু করে। এতে করে তিস্তার কর্মসূচি ব্যাঘাত ঘটাতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এটা ভারতের চাল হতে পারে বলে তিনি মনে করেন। কারণ এই মৌসুমে কখনো ভারত পানি ছাড়ে না। এ ছাড়া তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেগে উঠা বালুচরের রসুন, পেঁয়াজ, মিষ্টি কুমড়া, ডাল বাদামসহ অন্যান্য ফসল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।
এ বিষয়ে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপ অপারেটর নুরুল ইসলাম বলেন, উজান থেকে ঢল আসছে তিস্তা নদীতে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি সুত্র জানায় বর্তমানে তিস্তার সেচে ৫৫ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের কার্যকম চলছে। গত এক মাসে আগে নদীতে ৩ হাজার কিউসেক পানি ছিল। যা কমতে কমতে ১ হাজার ৮০০ কিউসেকে নেমে এসেছিল। ধারনা করা হচ্ছে হঠাৎ করে উজানের ঢল আসায় তিস্তায় ৫ হাজার কিউসেক পানি প্রবাহিত হতে পারে।
ছাতুনামা এলাকার কৃষক রফিকুল ইসলাম রাত ১১ টায় মুঠোফোনে জানান, তিস্তায় এখনও পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। বলা যাচ্ছেনা রাতের মধ্যে আবার বন্যা সৃষ্টি না হয়। হলে দ চরের জমির ফসলের মারাত্বক ক্ষতি হয়ে যাবে। এতে চরের কৃষকদের পথে বসতে হবে। তিনি মনে করেন পলি ও বালুতে নদী ভরাট হয়ে গেছে। ফলে উজানের ঢল এলেই তিস্তা উপচে পড়ছে।