মোহাম্মদ জুবাইর॥ নেশার টাকার জন্য আপন মাকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে খোদ আপন ছেলের বিরুদ্ধে। নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন নবীনগর হাউজিং সোসাইটি সেলিম মন্জিলের ভাড়াটিয়া ৬৫ বছরের বৃদ্ধা রাজিয়া বেগম স্বামী মৃত ওবায়দুল কাদেরকে মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) ভোর রাতে ছোট ছেলে শাহজাহানের বিরুদ্ধে এই হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
এলাকাবাসীর তথ্যমতে, ৬৫ বছরের বৃদ্ধা রাজিয়া বেগমকে দীর্ঘদিন যাবত নির্যাতন করে আসছিল তার নেশাগ্রস্থ ছোট ছেলে অভিযুক্ত শাহজাহান। এতে তার মা শারীরিক মানসিক ভাবে অসুস্থ ছিল। গত কয়েকদিন যাবত তার মাকে নেশার টাকার জন্য চাপ দিয়ে আসছিল শাহজাহান। নিহত বৃদ্ধা রাজিয়া বেগমের শেষ সঞ্চয়ের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পায়তারা করে আসছিল সিএনজি চালক শাহজাহান। তাদের মতে, রাজিয়া বেগমের হত্যাকান্ডের ঘটনা ধামাচাপা দিতে চেষ্টা করছে তার পরিবার। রাতে এই ঘটনা ঘটলেও এলাকাবাসী ভোর ৪ টার দিকে এই পরিবারের অস্বাভাবিক চলাফেরা দেখে সন্দেহ করলে এক পর্যায়ে তারা বৃদ্ধা রাজিয়া বেগম ফাঁসিতে ঝুলেছেন বলে জানান তাদের।
পরিবারের সদস্যরা বলেন, রাজিয়া বেগম মানুষিক ভাবে অসুস্থ। তিনি মানুষিক চিকিৎসাধীন ছিলেন। মানুষিক সমস্যার কারনে তিনি নিজেই ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে বলে জানান তারা।
এদিকে অভিযুক্তের দিদার বড় ভাইয়ের বিরুদ্ধে ছোট ভাইকে বাঁচাতে এই ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। মৃত মাকে মর্গে রেখে আদালতে ময়নাতদন্ত ঠেকানোর পায়তারা করছেন বলে জানাযায়। এ বিষয়ে দিদারের মুঠোফোনে (০১৮৭৯২৩৫০৩৫) যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে ময়না তদন্ত ঠেকাতে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার কথা অকপটে স্বীকার করেন। তিনি বলেন, আমার মা দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন, তাই হয়তো তিনি আত্মহত্যা করেছেন। আমরা চাইনা অযথা মাকে ময়না তদন্ত করা হোক। তার ভাই শাহজাহান নেশায় আসক্ত থাকার কথা স্বীকার করলেও তবে তিনি তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে মাকে হত্যার অভিযোগ অস্বীকার করেন।
সিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) মোকলেছুর রহমান এবিষয়ে আমাদের প্রতিবেদককে বলেন, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য দেওয়া হয়েছে। রিপোর্ট আশারপর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বায়েজিদ বোস্তামী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস জাহান আমাদের প্রতিবেদককে বলেন, আমরা তথ্য পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছি। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আমরা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার ছেলে শাহজাহান কে থানা হেফাজতে রেখেছি। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসলে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
৬৫ বছর বৃদ্ধা রাজিয়া বেগম মৃত ওবাইদুল হকের স্ত্রী ও লক্ষিপুর জেলার চর রহিতা গ্রামের বাসিন্দা। ৬ ডিসেম্বর ভোর ৪ টার দিকে এলাকাবাসী রাজিয়া বেগম ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছেন বলে তার পরিবার সূত্রে জানেন।