আব্দুল্লাহ আল মামুন : বিলুপ্তির দ্বারে কালের স্বাক্ষী মাটি ও বাঁশের তৈরী ধানের গোলা। উপজেলার কিছু কিছু গ্রামে এখনো কালের স্বাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে মাটি ও বাঁশ দিয়ে তৈরি ধানের গোলা। এসব অঞ্চলের মানুষের এক সময় গোলাভরা ধান ও পুকুরভরা মাছ ছিল কিন্তু সময়ের প্রেক্ষাপটে এখন ওইসব ঐতিহ্যের সবকিছুই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
এ প্রজন্মের মানুষের কাছে পূর্বেকার ওইসব রীতিনীতি যেন এখন রূপকথার গল্প কাহিনীর মতো। বর্তমানে ধান চাষের জমির পরিমাণ ক্রমান্বয়ে কমে আশায় এখন আর কৃষক বা চাষিদের গোলাভর্তি ধান ঘরে ওঠে না। নেই আগের মতো গোলার ব্যবহার।সবই যেন বিলুপ্ত হতে চলেছে। সেইসঙ্গে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী ধানসহ শস্য রাখা গোলার ব্যবহার। শত বছর আগের তৈরি ধানের গোলা কিছু কিছু কৃষকের বাড়ির সামনে আজও কালের সাক্ষ্য দিচ্ছে। এ প্রসঙ্গে দেবহাটার সখিপুর গ্রমের মৃত তরফতুল্য গাজী ছেলে গোলাম মোস্তফা বলেন বাপ-দাদার তৈরি এই গোলাগুলো স্মৃতি হিসেবে রাখা হয়েছে। ধানসহ বিভিন্ন শস্য রাখা গোলা এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে। ক্রমান্বয়ে হারিয়ে যাচ্ছে ধান সংরক্ষণ করা গোলার আবহমান রীতি।এখন শুধু পূর্বপুরুষের তৈরি করা অল্পসংখ্যক গোলা ছাড়া নতুন কোনো শস্য মজুদ রাখার গোলা আর চোখে পড়ে না। যুগেরও পরিবর্তন ঘটেছে। পূর্বপুরুষদের মতো এখন আর গোলার প্রয়োজন হয় না। আগে গ্রামের মানুষদের ধান মাড়াই করে গোলায় তোলার যে আনন্দ ছিল, এখন আর তার দেখাই মেলে না। আধুনিকতার ছোঁয়ায় কালের বিবর্তনে সব হারিয়ে যেতে বসেছে।এবিষয়ে দেবহাটা উপজেলার কোড়া গ্রামের কৃষক আকবার আলি বলেন, বাপ ও দাদার কাছে শুনেছি- সেই আমলে রাস্তাঘাটের অবস্থা ছিল খুবই করুণ। গরুর গাড়ি ছাড়া মানুষের চলাচলসহ ধান বিক্রির কোনো বিকল্প পথ ছিল না। বাজারগুলোও ছিল দূরে। তাই ধান গোলাতেই রাখা হতো দীর্ঘসময়। তার পর সুবিধামতো সময়ে বিক্রি করা হতো। বর্তমানে রাস্তাঘাট উন্নত, সেইসঙ্গে আশপাশে গড়ে উঠেছে ধান বেচা-কেনার আড়ত। নানা কারণে ভাগ বাটোয়ারা হয়ে কমে গেছে ব্যক্তিমালিকানা জমির পরিমাণ। তাই সময়ের প্রয়োজনে ধান গোলাতে তোলার আগেই বিক্রি করে দিতে হয়। তাই ধানের গোলাগুলো এখন বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন আমরা বয়সে কিছু দিন গোলার এর ব্যবহার দেখছি, কিন্তু বর্তমান জেনারেশন জনে না এটা কি কাজ ছিলো। বর্তমান সময় গোলাঘর তেমন কোন প্ররোজন হয়না কারণ গোলাঘরে ফসল সংরক্ষণ করলে নষ্ট হওয়ার সম্ভবনা থাকে, বর্তমান বিশ্ব উন্নত হয়েছে তাই সংরক্ষণ করার জন্য এখন পাটের বস্তা, পেপারের বস্তা ও প্লাস্টিকের ড্রাম ব্যাবহার হয় এর ফলে গোলার ব্যাবহার কমে গেছে, তবে আমি চাই আমাদের গ্রাম গঞ্জে যাদের বাড়িতে এখনো গোলা আছে সেটা কি ভাবে সংরক্ষণ করা যায় সেদিকে আমাদের সবার খেয়াল রাখা।
সম্পাদক : মীর দিনার হোসেন (যুগ্ম আহবায়কঃ সর্বস্তরে স্মৃতিসৌধ বাস্তবায়ন আন্দোলন), মোবাইল: ০১৫৮১-২৪৪২০০ * প্রধান সম্পাদক : মির্জা গালিব উজ্জ্বল ( সদস্য সচিবঃ সর্বস্তরে স্মৃতিসৌধ বাস্তবায়ন আন্দোলন) মোবাইল: ০১৭২৮-৭৭৫৯৯০।
মেইল: bangladeshsokal@gmail.com, web: www.bd-sokal.com
Copyright © 2025 বাংলাদেশ সকাল. All rights reserved.