স্টাফ রিপোর্টার: নওগাঁর রাণীনগরে কথিত সরকারি সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয়দানকারী রাজু প্রামাণিকের (৩৩) বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় এক দিনমজুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ।
অভিযোগকারী উপজেলার কাটরাশইন গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের ছেলে দিনমজুর টিউবয়েল মিস্ত্রী আব্দুল কুদ্দুস বলেন, অনেক কষ্টে অর্থ যোগার করে আমার মেয়ে রানু বিবি প্রায় ৬মাস আগে নিজের ও পরিবারের ভাগ্য বদলানোর আশায় দালালদের মাধ্যমে সৌদি আরব গেছে। সেখানে যাওয়ার পর থেকে মেয়ে কোন কাজ না পেয়ে বর্তমানে অনেক কষ্টে দিনানিপাত করছে। এমতাবস্থায় আমার মেয়ে বিদেশ থেকে চলে আসবে। একই গ্রামের নিজেকে সরকারি সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মকর্তা হিসেবে নিজেকে পরিচয় দেয়া আফজাল হোসেনের ছেলে রাজু প্রামানিক আমার পূর্ব পরিচিত। রাজু এই বিষয়টি জানতে পেরে মাত্র ১২দিনের মাথায় আমার মেয়েকে দেশে ফিরিয়ে আনার প্রলোভন দিয়ে অফিসে ৩০হাজার টাকা জমা দিতে হবে আর তার যাতায়াতের খরচ হিসেবে ৫হাজার টাকা দাবী করলে আমি মেয়েকে ফিরে পাওয়ার আশায় অনেক কষ্ট করে রাজুকে ৩৫হাজার টাকা প্রদান করি।
টাকা নেয়ার প্রায় ২মাস অতিবাহিত হলেও রাজু এখনোও পর্যন্ত আমার মেয়েকে ফিরে আনতে পারেনি। তাই রাজুকে বার বার টাকা ফেরত দেয়ার বিষয়ে তাগাদা দিলে সে উল্টো আমাকে জনসম্মুখে পুলিশের ও মারপিট করাসহ খুন জখমের ভয়ভীতি ও হুমকি-ধামকী প্রদান করে আসছে। এমতাবস্থায় আমি চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্য দিন পার করছি। রাজু শুধু আমার কাছ থেকেই নয় সে দীর্ঘদিন যাবত গ্রামের ভোলাভালা মানুষদের বিভিন্ন বিষয়ে সুবিধা নিয়ে দেয়ার প্রলোভন দিয়ে লাখ লাখ টাকা আত্মসাত করে আসছে। আমি এই প্রতারক রাজুর দৃষ্টান্তর মূলক শাস্তি দাবি করছি। আর আমার মেয়েকে আমার বুকে ফিরে দেয়ার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কাটরাশইন গ্রাম ও বাজারের অনেকেই বলেন, রাজু শুধু নিজেকে সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মী হিসেবেই নয় কবিরাজ হিসেবেও পরিচয় দেয়। বর্তমানে রাজু কাটরাশইন বাজারে একটি অফিস খুলে অফিসের ভিতরে বিভিন্ন ধরণের বড় বড় সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে প্রতারনার মাধ্যমে গ্রামের গরীব, অসহায় ও খেটে খাওয়া মানুষদের কাছ থেকে অর্থ আত্মসাৎ করে আসছে। প্রতারক রাজুর প্রতারণার ফাঁদে পরে নি:স্ব হচ্ছে শত শত নিরীহ মানুষ। বর্তমানে কাটরাশইন গ্রাম ও তার আশেপাশের মানুষরা রাজুর অভিনব প্রতারনায় অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। সে নিজেকে সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মী হিসেবে পরিচয় দিয়ে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষকে ব্লাকমেইল করে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে এবং ফেসবুকের মাধ্যমে মিথ্যে তথ্য ছড়িয়ে দিয়ে সামাজিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করে আসছে।
দ্রুত এই প্রতারকের দৌরাত্ম বন্ধ করে আইনের মাধ্যমে দৃষ্টান্তর মূলক শাস্তি দাবী স্থানীয়দের। এতে করে এই অঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষরা এই প্রতারকের হাত থেকে রক্ষা পাবে।
নিজেকে দৈনিক রুদ্র বাংলা পত্রিকার সাংবাদিক ও সরকারি মানবাধিকার কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দেয়া রাজু প্রামাণিকের কাছে মুঠোফোনে (০১৭৭৫৩২৬৩২৩) এই অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনি যে সাংবাদিকই হোন না কেন আপনাকে টাইম নাই। আপনার যা ইচ্ছে লিখেন। বিষয়টি থানার ওসি জানেন। তিনিই এই বিষয়টির সমাধান করবেন। আপনি বিষয়টি নিয়ে মাথা না মারাটাই ভালো।
এ ব্যাপারে রাণীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, এই বিষয়ে রাজুর বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সম্পাদক : মীর দিনার হোসেন (যুগ্ম আহবায়কঃ সর্বস্তরে স্মৃতিসৌধ বাস্তবায়ন আন্দোলন), মোবাইল: ০১৫৮১-২৪৪২০০ * প্রধান সম্পাদক : মির্জা গালিব উজ্জ্বল ( সদস্য সচিবঃ সর্বস্তরে স্মৃতিসৌধ বাস্তবায়ন আন্দোলন) মোবাইল: ০১৭২৮-৭৭৫৯৯০।
মেইল: bangladeshsokal@gmail.com, web: www.bd-sokal.com
Copyright © 2025 বাংলাদেশ সকাল. All rights reserved.