বিবাহযোগ্য নারী ও পুরুষের মধ্যে দাম্পত্য সম্পর্ক প্রনয়নের বৈধ চুক্তির মাধ্যমে স্বীকারোক্তি এবং অঙ্গীকারের মধ্য দিয়ে নিকাহ বা বিবাহ (শাদী) সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
শাব্দিক অর্থের দিক দিয়ে নিকাহ বা বিবাহকে যৌন সঙ্গম বলা হলেও এর অর্থে ব্যপকতা রয়েছে। যাতে পরস্পরের অংশীদার হওয়া, দায়িত্ব ও কর্তব্যের দেকভাল হওয়াও বোঝায়।
বৈবাহিক জীবনের কতিপয় উপকারী দিকগুলোর মধ্যে রয়েছে-
ক) বিবাহ দৃষ্টিকে সংযত রাখে এবং যৌনতাকে সংযমী করে।
খ) সামাজিক, গোত্রীয়, ও পারিবারিক সম্পর্ক বজায়; একে-অপরের ভালোবাসা বিনিময়, হারাম ও অপবিত্র বিষয়াদি থেকে নিজেদের রক্ষা করা যায়।
গ) বিভিন্ন প্রকার রোগ-ব্যাধি মুক্ত এবং নিরাপদ ও রূচিশীল যৌন চাহিদা সৃষ্টি হয়।
ঘ) ব্যভিচার থেকে নিজেদের স্বাভাবিক রাখা যায়।
ঙ) পরস্পরের মেলামেশায় কোন প্রকার মান-সন্মান বিনষ্টের ভয় আসেনা।
চ) বিবাহের মাধ্যমে সন্তান লাভের দ্বারা পিতৃত্ব ও মাতৃত্বের প্রাপ্তি পাওয়া যায়।
ছ) আত্মিক শান্তি ও মানসিক দৃঢ়তা আসে।
যাদের যৌন চাহিদা আছে তবে যিনায় লিপ্ত হবার আশঙ্কা নেই ইসলামি দৃষ্টিকোন থেকে তাদের জন্য বিবাহ করা সুন্নাত। অপরপক্ষে যাদের যিনায় লিপ্ত হবার আশঙ্কা রয়েছে তাদের জন্য বিবাহ করা ওয়াজিব বা ফরজের কাছাকাছি।
যাদের যৌন চাহিদা নেই যেমন, যৌন সক্ষমতাহীন ও বয়ষ্ক ইত্যাদি লোকের বিয়ে করা বৈধ। সেক্ষেত্রে মানবিক বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে। সেদিক থেকে ইসলামের আলোকে শুধুমাত্র সঙ্গম করা কিংবা একে-অপরের যৌন চাহিদা মেটানোকেই বিবাহ বলা হয় না। বিবাহ হলো- স্বামী-স্ত্রী হবার অনুমতি আছে এমন কোন পুরুষ ও নারীর সুস্থ্য-সুন্দর বন্ধন।
বিয়ের মৌলিক কয়েকটি শর্তঃ
১। স্বামী-স্ত্রী (বিপরীত লিঙ্গের) নির্ধারিত হওয়া।
২। উভয়ের সম্মতি থাকা।
৩। মেয়ের অভিভাবক ও দুজন স্বাক্ষী থাকা।
৪। যাদের সাথে বিয়ে হারাম তাদের অন্তর্ভুক্ত না থাকা।
৫। পাত্রের পক্ষ থেকে পাত্রীর জন্য মোহরানা নির্ধারণ করা।
৬। পরিবার ও সমাজে প্রচারণা করা।
পিতা-মাতার বৈবাহিক সম্পর্কের মাধ্যমেই কেবল একজন সন্তান নিজের পরিচয় দিতে গৌরববোধ করে।
ইসলামে সন্নাস জীবনের কঠোর বিরোধিতা করা হয়েছে। প্রত্যেক বালেগ নারী-পুরুষের মাঝে পরীক্ষা স্বরূপ জৈবিক চাহিদা বিদ্যমান। তাই যৌবনকে অপাত্রে ব্যয় না করে স্বীয় চরিত্রকে যথাযথ ভাবে বজায় রাখা এবং রাসূল সাঃ এর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাহ হিসেবে এটি কায়েম করা উচিত।
লেখক: ওমায়ের আহমেদ শাওন।