ডিমলা, নীলফামারী প্রতিনিধি: নীলফামারীর ডিমলায় অনুমতিবিহীন ডিমলা স্কয়ার ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে প্রসবকালীন অস্ত্রোপচারের পর তাসলিমা আকতার তুলি (২২) নামে এক প্রসূতির মৃত্যর অভিযোগ উঠেছে। তবে নবজাতক সুস্থ আছে। পরে সোমবার (৩ জুন) সন্ধ্যায় অনুমোদনহীন ক্লিনিকটি সিলগালা করেন জেলার ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. আবু হেনা মোস্তফা।
মৃত তাসলিমা আকতার তুলি উপজেলার শালহাটী এলাকার আসাদুজ্জামান আসাদের স্ত্রী। গত ৩১ মে সকালে ওই হাসপাতালে তাঁর অস্ত্রোপচার হয়।
নিহতের পরিবার ও স্বজনরা জানান , তীব্র ব্যথা নিয়ে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ক্লিনিকে ভর্তি হয় তুলি। রাতে রোগীর বাবা ও শশুর বাড়ীর লোকজনের সিদ্ধান্ত হীনতার কারণে তার সিজার করা হয়নি। পরদিন শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭ টায় রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ডা. রাজু আহমেদ তাঁর অস্ত্রোপচার করেন। কিছুক্ষণ পর কন্যা সন্তানের জন্ম দেন তসলিমা। এরপর চিকিৎসক জানান, মা ও নবজাতক উভয়েই ভালো আছে। অপারেশন শেষে ৯টার দিকে তাকে পোস্ট অপারেটিভ রুমে নেয়া হয়। তখনো চিকিৎসকরা জানান, তুলি ভালো আছে।
তবে অপারেশনের দু’ঘণ্টা পর তুলির প্রচন্ড রক্তক্ষরণ হতে থাকে। অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। হাসপাতালে ভর্তি শেষে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
স্ত্রীর মৃত্যু প্রসঙ্গে আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, আমার স্ত্রী তুলির সিজারিয়ান অপারেশন করা হয়। চিকিৎসকের কাছে সার্বিক অবস্থা জানতে চাইলে তারা জানায় রোগী এবং নবজাতক উভয়েই ভালো আছে। ১১টার দিকে শুনি রোগী ভালো আছে, তবে কিছুটা ব্লিডিং হচ্ছে।
অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে তুলির মারা যাওয়ার কথা স্বীকার করে ওই সিজারিয়ান অপারেশনের ডা. মো: রাজু আহমেদ জানান, ‘আমাকে ক্লিনিক থেকে জানায় একজন সিজারের রোগীর আছে। ক্লিনিকে গিয়ে দেখি রোগীর মাসিকের রাস্তা দিয়ে বাচ্চার হাত বের হয়ে গেছে। তাদের বলি এটা অপারেশন ছাড়া কোনো উপায়। পরে ৭টার দিকে সফলভাবে অপারেশন সম্পন্ন হয়। অপারেশন শেষে রোগীকে রক্ত লাগবে এটা জানানোর পরেও তারা রক্তের ব্যবস্থা করতে পারেনি। এক পর্যায়ে ১১টা থেকে রক্তক্ষরণ শুরু হলে দুপুর ২টায় ক্লিনিকে গিয়ে দেখি তারা রক্তের ব্যবস্থা করতে পারেনি। রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি দেখে স্যালাইন দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠাতে বলি।
এ বিষয়ে নীলফামারীর ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. মো. আবু হেনা মোস্তাফা কামাল বলেন, লাইসেন্সবিহীন, অনুমোদন না থাকায় ক্লিনিকটি সিলগালা করা হয়েছে। রোগী মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
মৃত্যুর ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। তদন্ত রির্পোট অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান স্বাস্থ্যের এই কর্মকর্তা।