বাংলাদেশ সকাল
সোমবার , ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | ২৩শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. আবহাওয়া
  5. এক্সক্লুসিভ
  6. কৃষি বার্তা
  7. ক্যাম্পাস
  8. খেলাধুলা
  9. খোলা কলাম
  10. জাতীয়
  11. ধর্ম ও জীবন বিধান
  12. নির্বাচন
  13. প্রবাস
  14. বিনোদন
  15. বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন

মেহেরপুরের অনলাইন জুয়ার সেকেণ্ড ম্যান অনিক ও তার দুই সহযোগী ডিবির জালে

প্রতিবেদক
অনলাইন ডেস্ক
ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৩ ৮:৩৮ অপরাহ্ণ

মো. আজিমুল হোক,মেহেরপুর॥ মেহেরপুরের অনলাইন জুয়ার সেকেণ্ড ম্যান অনিক ও তার দুই সহযোগী ডিবির জালে বন্দী। মুজিবনগর উপজেলার কোমরপুর গ্রামের মাদার আলীর ছেলে অনিক ও তার দুই সহযোগীকে ঢাকা থেকে আটক করেছে ডিবি পুলশ।

জানা গেছে, গত শনিবার দুপুরে ঢাকা মিরপুর-২ এলাকার একটি ফ্ল্যাট থেকে অনিক ও হাসিবকে আটক করে মেহেরপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) এবং মুজিবনগর দারিয়াপুর থেকে রিমেট নামের একজনকে মুজিবনগর থানা পুলিশের একটি অভিযানিক দল।

আটকৃতরা হলেন-অনলাইন জুয়ার উল্লেখিত স্থান মেহেরপুর জেলার মুজিবনগর উপজেলার কোমরপুর গ্রামের অনলাইন জুয়ার অন্যতম হোতা মাদার আলীর ছেলে মোস্তাক নাহিদ অনিক (২২), কোমরপুর গ্রামের মোস্তাকিন আলীর ছেলে মেহেদী হাসিব (২২), দারিয়াপুর গ্রামের মনিরুল ইসলামের ছেলে মুশফিকুর রহমান রিমেট (২৩)।

আটকদেরকে গতকাল ১২ ফেব্রুয়ারি রবিবার বিকালে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মুজিবনগর আদালতে হাজির করা হলে হাসিব ও রিমেট ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী প্রদান করে। পরিশেষে আদালতের বিজ্ঞ বিচারক তাদের জবানবন্দী গ্রহণ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

পুলিশ জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এস আই আশরাফুল ইসলামের নেতৃত্বে মেহেরপুর ডিবি পুলিশের একটি টিম রাজধানীর মিরপুর-২ এলাকার একটি আবাসিক ভবনে অভিযান চালায় । অভিযানের সময় হাতেনাতে অনিকের কাছে থেকে দুটি এবং হাসিবের কাছে থেকে একটি অনলাইন জুয়ার চ্যানেলসহ গ্রেফতার করা হয়।

তথ্য সাপেক্ষে জানা যায়, অনিকের কাছে দুটি অনলাইন চ্যানেলের মধ্যে একটি তার নিজের নামে এবং অপরটি তার পিতা মাদারের নামে রয়েছে। প্রতিটি চ্যানেলে গড়ে প্রতিদিন আয় হয় ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা।

পুলিশ আরো জানায়, মোস্তাক নাহিদ অনিক বাংলাদেশের অনলাইন জুয়া কার্যক্রমের সেকেণ্ড ম্যান হিসেবে সকল কর্মকাণ্ড পরিচালিত করে আসছিলো। অনিক ওয়ান এক বেট, মেল বেট ও লাইন বেটের সকল চ্যানেল নিয়ন্ত্রণ করেন। তার কাছে থেকে অনিক নাগাদ, লিনিয়া মাদার নামের দুটি মূল চ্যানেল, এবং হাসিবের কাছে থেকে সাজিব বিকাশ নামের একটি চ্যানেল সহ ব্যবহৃত মোবাইল ও সিম উদ্ধার করেছে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের সময় তারা জানিয়েছে, মেহেরপুরের বিভিন্ন অঞ্চলে ২০টি চ্যানেল দেওয়া আছে। যেগুলো সিম সরবরাহ করে তার অনিকের পিতা মাদার আলী। আর এগুলো সব নিয়ন্ত্রণ করে অনিক নিজে।

আরো জানা গেছে, রাশিয়া থেকে বাংলাদেশে অনলাইন জুয়ার পুরো কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করে টম (ছদ্মনাম) নামের এক ব্যক্তি। অনিক বাংলাদেশের সেকেণ্ড ম্যান হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনা করেন। অনিকের অনুমোদন ছাড়া কাউকে এ চ্যানেল দেওয়া হয় না। এর জন্য অনিক পেয়ে থাকেন চ্যানেলের ৮ শতাংশ এবং টম পান ১৫ শতাংশ। এভাবে মেহেপুরের দুই শতাধিক তরুণ ও বিভিন্ন বয়সের মানুষকে তারা অনলাইন জুয়ার সাথে জড়িয়েছে। যার অন্যতম দূর্গ মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার কোমরপুর। এখনো তাদের এসকল চ্যানেল পরিচালনা করছে সমরাজ, উজ্জল, সোহাগ খুড়া, জঙ্গল, লাল মিয়াসহ প্রায় ২০ জন এজেন্ট। এছাড়া বেশ কয়েকজন চ্যানেলের জন্য টাকা জমা দিলেও অনিকের কারণে তারা চ্যানেল পায়নি। যা থেকে অনিক ও টম কয়েক কোটি অবৈধ আয় করেছে।

স্থানীয়রা জানান, মাদার আলী সব সময় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আমাম হোসেন মিলুর ছত্রছায়ায় থেকে বিভিন্ন ধরণের কর্মকাণ্ড পরিচালিত করে আসছে।

যা সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা গেছে। আগামীতে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের শীর্ষ পদ নেওয়ার চেষ্টাও করে চলেছেন । তার বিরুদ্ধে মেহেরপুর কয়েকজন সাংবাদিককে মাসোহারা দিয়ে ম্যানেজ করার অভিযোগ ও এক অনলাইন এজেন্টের স্বীকারোক্তীকে উঠে এসেছে। আরো অভিযোগ আছে যে মেহেরপুর সদর উপজেলার পিরোজপুরে মাদার আলীর শশুরবাড়ি এলাকায় একজনকে চার বিঘা জমি নিয়ে চারটি চারটি চ্যানেল দিয়েছেন ।

আরো জানা যায় যে তিনি কোমরপুরের স্থায়ী বাসিন্দা হলেও সদর উপজেলার সাহেবপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের লাইব্রেরিয়ান হিসেবে কর্মরত। অথচ কোটি টাকা খরচ করে ২তলা বিশিষ্ট রাজপ্রাসাদ বানিয়েছেন তিনি।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ১০ থেকে ১২টি লাইনবেট সাইটের এজেন্ট তিনি। তিনি নিজেও এই লেনদেনের সাথে জড়িত এবং তার ছেলে অনিক ঢাকা থেকে তার এসকল লেনদেন করে থাকেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ছেলে অনিক ঢাকায় বাসা ভাড়া করে অভিযাত জীবনযাপন করেন বলে জানা গেছে।

মেহেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) আজমল হোসেন বলেন,অনলাইন জুয়ার দূর্গে একের পর এক হানা দিয়ে ইতোমধ্যে প্রায় অনলাইন জুয়ার সাথে সংশ্লিষ্ট অর্ধশতাধিক জনকে আটক করে আইনের আওতায় নিয়ে এসেছে। মাদারের ছেলে অনিককে আটকের মধ্যে দিয়ে বড় ধরণের একটি সফলতার মাইল ফলক স্পর্শ করলো মেহেরপুর পুলিশ বিভাগ।

মাদার আলীকে কয়েক মাস আগেও পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নেওয়া হয়েছিলো ।পুলিশ সুপারের নামে স্থানীয় অনলাইন এজেন্টদের কাছে টাকা তোলার অভিযোগও ছিলো তার বিরুদ্ধে। অথচ বর্তমান পুলিশ সুপার রাফিউল আলম, পিপিএম (সেবা), অনলাইন জুয়ার বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষনা দিয়ে তাঁর বাহিনীকে মাঠে নামিয়েছেন। পুলিশের ওই টিমটি অনলাইন জুয়ার দূর্গে হানা দিয়ে একের পর এক সফল অভিযান বাস্তবায়ন করছে।

সর্বশেষ - এক্সক্লুসিভ

আপনার জন্য নির্বাচিত