রিফাত আরেফিন : যশোর পৌরসভার সাবেক আলোচিত-সমালোচিত কাউন্সিলরদের মধ্যে অন্যতম গোলাম মোস্তফা ও তার দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে একের পর এক চাঁদাবাজি, খুন, গুম ও অসাধু পুলিশ সদস্যদের সহায়তায় ক্রসে হত্যার ভয় দেখিয়ে কোটি কোটি হাতিয়ে নেয়ার মামলা হচ্ছে।
আজ বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) শংকরপুর মুরগির ফার্মগেট এলাকার ভাঙ্গাড়ি ব্যবসায়ী হবি চৌধুরী চাঁদাবাজির অভিযোগে মোস্তফা ও তার দুই ভাই এবং ছেলেসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে যশোর আদালতে মামলা করেছেন। এরআগে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে খুন-গুম, ক্রসে হত্যা ও হত্যার ভয় দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়ার মামলায় মোস্তফাকে আসামি করা হয়েছে। অধিকাংশ মামলায় তার দুই ভাইকেও আসামি করা হয়েছে।
এ মামলার অপর আসামিরা হলেন-শংকরপুর এসহাক সড়কের সাবেক কাউন্সিলর গোলাম মোস্তফা ও তার দুই ভাই গোলাম রসুল ডাব্লু, গোলাম সিদ্দিক, আলমগীর হোসেন পিন্টু, তার দুই ছেলে জুয়েল এবং রুবেল, একই এলাকার মামুন ওরফে নায়ক মামুন।
অভিযোগ আমলে নিয়ে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম কিবরিয়া এ বিষয়ে তদন্ত করে কোতোয়ালি থানার ওসিকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
বাদীর অভিযোগ-আসামিরা এলাকার চিহ্নিত চাঁদাবাজ। সদ্য পতন হওয়া আওয়ামীলীগ সরকারের সন্ত্রাসী ক্যাডার হিসাবে ওই এলাকায় তারা পরিচিত। ২০১৭ সালে হবি চৌধুরীকে নানাভাবে হয়রানি করতে থাকে আসামিরা। একপর্যায় আসামিরা হবি চৌধুরীর কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় আসামিরা তার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে যায়। ২০১৭ সালের পহেলা জানুয়ারি সকাল ১১ টার দিকে সকল আসামি বাদীর বাড়িতে হামলা চালায়। সাবেক কাউন্সিলর গোলাম মোস্তফা প্রথমে পিস্তলের বাট দিয়ে বাদীর কপালে আঘাত করে। এরপর আসামি গোলাম রসুল ডাব্লু লোহার রড দিয়ে তার পায়ে আঘাত করতে থাকে। এসময় তার স্ত্রী ঠেকাইতে আসলে তাকেও মারধর করা হয় ও তার স্ত্রীর পরনের কাপড় চোপড় নিয়ে টানা হেছড়াসহ গলায় থাকা এক ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নেয়। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় জোর করে ঘরের ভিতর ঢুকে আলমারি ভেঙ্গে দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে যায়। আসামিরা ভাংচুর, লুটপাট ও মারধর করে চলে যাওয়ার সময় পেট্রোল দিয়ে রান্নাঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ নিয়ে প্রতিবাদ করলে হত্যার হুমকি দেয়। বাধ্য হয়ে বাদী মুখবুজে সহ্য করেন। পরিস্থিতি অনুকুলে আসায় তিনি আদালতে এ মামলা করেন।
উল্লেখ্য, এরআগেও কাউন্সিলার গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে। বিশেষ করে সরকার পতনের পর মামলার সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।