বাংলাদেশ সকাল
শনিবার , ২৫ অক্টোবর ২০২৫ | ১০ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি
  3. আইন আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আবহাওয়া
  6. এক্সক্লুসিভ
  7. কৃষি বার্তা
  8. ক্যাম্পাস
  9. খেলাধুলা
  10. খোলা কলাম
  11. জাতীয়
  12. তথ্য ও প্রযুক্তি
  13. ধর্ম ও জীবন বিধান
  14. নির্বাচন
  15. প্রবাস

ভূরুঙ্গামারীতে আটককৃত গাঁজা টাকার বিনিময়ে বিএনপি নেতা ও দফাদার মিলে করলেন দফারফা

প্রতিবেদক
অনলাইন ডেস্ক
অক্টোবর ২৫, ২০২৫ ১০:০৫ অপরাহ্ণ

 

‎নিজস্ব প্রতিবেদক: ‎কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে ২৩ কেজি গাঁজা আটকের পর মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মী ও ইউনিয়ন পরিষদের দফাদারের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।

‎স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) রাতে উপজেলার পাথরডুবি ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের পাথরডুবি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন কামরুলের বাড়ি থেকে দফাদার আলম হোসেনের নেতৃত্বে, ইউনিয়ন সেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব নুরুজ্জামান ব্যাপারী, ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের  আহবায়ক কমিটির সদস্য খলিলুর রহমান খলিল (ডিবি খলিল) ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির ছাত্র সমাজের সভাপতি কালাম, বিএনপি,নেতা ফারুক, হাফিজুর, হাসেম, শরিফুল কবির মনো মিলে প্রায় ২৩ কেজি গাঁজা উদ্ধার করেন।

‎নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংশ্লিষ্ট একাধিক ব্যক্তি জানান, প্রতিদ্বন্দ্বী মাদকচক্রের সূত্রে তারা ওই বাড়িতে মাদক থাকার খবর পান। এরপর নজরদারি চালিয়ে তালাবদ্ধ টয়লেট থেকে গাঁজাগুলো উদ্ধার করেন। পরে মোটরসাইকেলে করে মাদক সরিয়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।

‎অভিযোগ অনুযায়ী, গাঁজার মূল মালিক সুজন নামের এক ব্যক্তি মাদক ফেরত দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানালে ১ লাখ ৫ হাজার টাকায় দফা-রফা হয়। পরে নগদ ৭৫ হাজার টাকা গ্রহণের পর মাদক তার হাতে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। তবে টাকার ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হলে বিষয়টি ফাঁস হয়ে যায়।

‎বুধবার (২২ অক্টোবর) সকালে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের কয়েকজন নেতা পাথরডুবি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সবুরের কাছে দফাদার আলমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেন। চেয়ারম্যান লিখিত অভিযোগ চাইলে কেউ বাদী হতে রাজি না হওয়ায় অভিযোগ জমা হয়নি।

‎বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উপজেলা সাবেক  সমন্বয়ক ছাত্রনেতা রুকনুজ্জামান রোকন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গত বছর থেকেই আমরা এলাকায় মাদকবিরোধী আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় এসব অভিযান বারবার ভেস্তে যাচ্ছে।

‎পাথরডুবি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হযরত আলী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি উপজেলা নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। অপরাধী যেই হোক, দলীয়ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

‎ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সবুর বলেন, দফাদারের বিরুদ্ধে মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

‎ভূরুঙ্গামারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আল হেলাল মাহমুদ জানান, ‎ঘটনার বিষয়ে এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

‎ঘটনার পর থেকেই এলাকাবাসী তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। তারা প্রশ্ন তুলেছেন, একজন ইউনিয়ন পরিষদের দফাদার, যিনি মূলত জনগণের সেবা ও প্রশাসনের সহায়ক ভূমিকা পালন করেন, তিনি কীভাবে এমন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকতে পারেন?

‎একজন প্রবীণ নাগরিক বলেন, “জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব যাদের হাতে, তারাই যদি অপরাধে জড়ায়, তাহলে সমাজে আইনের প্রতি আস্থা নষ্ট হবে। প্রশাসনের উচিত এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের কঠোর শাস্তি দেওয়া।

‎এলাকাবাসীর দাবি, ইউনিয়ন পরিষদ হলো জনগণের আস্থা ও ন্যায়ের প্রতীক। সেখানে দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি যদি অপরাধে জড়িত হন, তাহলে তা শুধু প্রতিষ্ঠানের নয়, গোটা সমাজের জন্য লজ্জাজনক। তারা দ্রুত তদন্ত ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছেন ।

সর্বশেষ - খেলাধুলা