![](https://bd-sokal.com/wp-content/plugins/print-bangla-news/assest/img/print-news.png)
সবুজ মিয়া, স্টাফ রিপোর্টার (রংপুর)॥ রংপুরের গঙ্গাচড়া মডেল থানা প্রাঙ্গণে অবস্থিত সারি সারি গাছগুলোতে হাঁড়ি বেঁধে পাখির অভয়াশ্রম তৈরী করার দৃশ্য দেখে মনে হচ্ছে সামনে মধু মাস আসছে, মৌসুমী ফল খেতে আসবে নতুন জামাই। তাইতো এখন থেকেই জোরেশোরে চলছে থানা কর্মকর্তাদের অতিথি বরণের এই আয়োজন।
ব্যাতিক্রমী আয়োজনের প্রধান দায়িত্ব পালনে ব্যাস্ত খোদ গঙ্গাচড়া মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) মমতাজুল হক সাথে সহযোগী হিসেবে আছেন আরেক উপ-পুলিশ পরিদর্শক শাহরিয়ার হক, রেজায়ে রাব্বি পলাশ, তানজিল ইসলাম।
শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজেই নয়, ইতিপূর্বে বিভিন্ন সামাজিক কাজেও পুলিশের অংশগ্রহণ বিভিন্ন সময় দেখা গেছে। তবে এই থানা পুলিশ কর্মকর্তার এমন ব্যতিক্রম উদ্যোগ দেখে থানায় সেবা নিতে আসা সাধারণ জনতা মিনিটের জন্য হলেও থমকে দাঁড়াতে বাধ্য হয়েছে। থানা প্রাঙ্গণে গ্রাম পুলিশদের সাথে নিয়ে এই পুলিশ কর্মকর্তার বিভিন্ন প্রজাতির ফলজ ও বনজ গাছে হাঁড়ি বেধে পাখির অভয়াশ্রম তৈরীর দৃশ্য দেখে বুঝা যায় পুলিশ এখন অনেক মানবিক হয়েছে তারা শুধু জনতার নয় পাখিদেও বন্ধু, থানায় সেবা নিতে আসা গ্রহীতাদের কাছে তাই জানান দিয়েছে । তার এই কাজ সর্বমহলে হচ্ছে প্রশংসিত। গোটা উপজেলার মধ্যে এই প্রথম এমন একটি ব্যাতিক্রমী উদ্যোগে প্রকাশ পেয়েছে জীব বৈচিত্রের প্রতি পুলিশের ভালোবাসা। যেখানে পুলিশের বিচরণ, সেখানেই হবে পাখিদের আবাসস্থল। তাদেরও যে একটি হৃদয় আছে তারাও ভালোবাসা দিতে জানে। এ কর্মকর্তা থানা প্রাঙ্গণে প্রায় ১০০ পাখির আবাসস্থল তৈরি করেছেন।
গতকাল বুধবার থানা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা গেছে, গাছে গাছে বাঁধা পাখির বাসা। থানা প্রাঙ্গণে ১০০টি গাছে পাখিদের অবাধ বিচরণে ২০০টি মাটির কলস বেঁধে দেওয়া হয়েছে। যেখানে বসত করতে পারবে প্রায় ৫০০ পাখি।
ওসি (তদন্ত) মমতাজুল ইসলাম জানান, শহর ও গ্রাম এলাকায় আগের মতো পাখি দেখা যায় না। বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও দিনদিন বন-জঙ্গল উজাড় হয়ে যাওয়ায় দেশ পাখি শূন্য হয়ে পড়েছে। এছাড়া শিকারি দ্বারা পাখি ধরায় দিনদিন দেশীয় প্রজাতির পাখির সংখ্যা কমে যাচ্ছে। তার এই ছোট্ট প্রয়াসে হয়তো গঙ্গাচড়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ দুলাল হোসেন জানান, দেশীয় প্রজাতির পাখি কমে যাচ্ছে। সবজায়গায় পাখির অভয়াশ্রম তৈরী করতে পারলে পাখির বংশবিস্তারে আবারো গাছগুলোে পাখির কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে উঠবে। এছাড়া সামনে ঝড় বৃষ্টির সময় যাতে পাখির অভয়াশ্রম তৈরির ফলে পাখিরা নিরাপদ বাসা পায়। তাই ফলদ গাছে মাটির হাঁড়ির বাসা স্থাপন করা হচ্ছে। সর্বোপরি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার তাগিদে এ উদ্যোগ ।