ক্রাইম ডেস্ক॥ খুলনা জেলার তেরখাদা থানাধীন কুশলা গ্রামের ভিকটিম সাব্বির(১৫) হত্যাকান্ডে জড়িত তদন্তে প্রাপ্ত সন্ধিগ্ধ আইনের সাথে সংঘাতে জড়িত কিশোর অপরাধী ১) মোঃ ফেরদৌস (১৭), পিতা মোঃ মনিরুল সেখ, সাং- ডিসাইপাড়া, কোড়ামারা, থানা-বাগেরহাট সদর, জেলা- বাগেরহাট’কে নারায়নগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও থানাধীন মেঘনা ব্রীজ সংলগ্ন এলাকা হতে গত ইং-৩০/০১/২০২৩ তারিখ ১৫:৩০ ঘটিকার সময় পিবিআই বাগেরহাট এর একটি টিম বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে আটক করেছে।
পিবিআই বাগেরহাট সুত্রে জানা যায়, মামলার বাদী শেখ বোরহান, পিতা-মৃত আঃ সাত্তার শেখ, সাং- কুশলা, থানা- তেরখাদা, জেলা- খুলনা গত ২৩/০১/২০২৩ তারিখ অভিযোগ করেন যে, বাদীর ছেলে সাব্বির শেখ(১৫) পাতলা টু তেরখাদা রাস্তায় বেশীর ভাগ সময় ভ্যান চালাত। গত ইং ০৯/০১/২০২৩ তারিখ সকাল অনুমান ১০:০০ ঘটিকার সময় ভ্যান চালানোর উদ্দেশ্যে বাড়ী থেকে ভ্যানসহ বাহির হয়ে যায়। একই দিনে ১৪:৩৪ ঘটিকার সময় বাদীর স্ত্রী ভিকটিম সাব্বিরকে ফোন দিয়ে বাড়ী আসার কথা বললে সে বলে আমি ভাড়া নিয়ে পাতলা টু তেরখাদা যাচ্ছি, আসরের দিকে বাড়ী আসব। পরবর্তীতে সন্ধ্যা হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও ভিকটিম বাড়ীতে না আসলে সন্ধ্যার দিকে বাদীসহ তার স্ত্রী ও বড় ছেলে ভিকটিমকে মোবাইলে কল করলে তার নম্বর বন্ধ পান। অনেক খোঁজাখুজি করে না পেয়ে ইং ১১/০১/২০১৩ তারিখ তেরখাদা থানায় একটি সাধারন ডাইরী করেন, যার নম্বর ৪৬৬, তারিখ-১১/০১/২০২৩খ্রিঃ। পরবর্তী ১৭/০১/২০২৩ তারিখ সন্ধ্যা অনুমান ০৬:০০ ঘটিকার সময় বাদী জানতে পারেন বাগেরহাট জেলার মোল্লাহাট থানাধীন ছোট কাচনা সাকিনস্থ ওমরের মোড় সংলগ্ন শেখ ওবায়দুর রহমান এর নির্মিত গোডাউনের নিচে ফাঁকা জায়গায় একটি পঁচাগলা লাশ পড়ে আছে। বিষয়টি স্থানীয় লোকজন মোল্লাহাট থানায় সংবাদ দিলে থানা পুলিশ উক্ত স্থানে উপস্থিত হয়ে মৃত দেহ দেখতে পান। বাদীসহ তার আত্মীয় স্বজন সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে মৃত দেহ দেখে লাশ সনাক্ত করেন। অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি/ব্যক্তিগণ কর্তৃক ভিকটিম সাব্বিরকে হত্যা করে ব্যাটারী চালিত ভ্যান ও সাথে থাকা একটি এন্ড্রোয়েড মোবাইল ফোন নিয়ে চলে যায়।
উক্ত ঘটনায় শেখ বোরহান, পিতা-মৃত আঃ সাত্তার শেখ, সাং- কুশলা, থানা- তেরখাদা, জেলা- খুলনা বাদী হয়ে ঘটনার বিষয়ে মোল্লাহাট থানার মামলা নং-১২, তারিখ-২৩/০১/২০২৩ খ্রিঃ, ধারা- ৩০২/২০১/৩৭৯/৩৪ পেনাল কোড দায়ের করেন।
পিবিআই হেডকোয়ার্টার্স এর নির্দেশনা অনুযায়ী থানা পুলিশের পাশাপাশি পিবিআই বাগেরহাট জেলা মামলাটি ছায়া তদন্ত শুরু করে। মামলার রহস্য উদঘাটন ও আসামী গ্রেফতারের জন্য পিবিআই বাগেরহাট জেলার পুলিশ সুপার মহোদয়ের নির্দেশে পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) জনাব আশরাফুল আলমকে প্রধান করে ৪(চার) সদস্যের একটি টিম গঠন করা হয়। উক্ত মামলাটি পিবিআই এর তফসিল ভুক্ত হওয়ায় পিবিআই বাগেরহাট কর্তৃক তদন্ত করার অনুমিত চেয়ে পত্র প্রেরণ করা হয়।
বর্ণিত মামলা থানায় রুজু হওয়ার পর তদন্তকালীন সময় মামলাটি পিবিআই হেডকোয়ার্টার্সের অনুমোদন ক্রমে পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) আশরাফুল আলম তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসাবে মামলার তদন্তভার গ্রহণ করেন।
পিবিআই বাগেরহাট জেলার পুলিশ সুপার মোঃ আবদুর রহমান মহোদয়ের দিক নির্দেশনায় তদন্তে প্রাপ্ত আইনের সাথে সংঘাতে জড়িত কিশোর অপরাধী মোঃ ফেরদৌসকে গ্রেফতার করে এবং হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত গামছা, ভিকটিমের ভ্যান গাড়ী ও এন্ড্রোয়েড মোবাইল ফোনের অংশ বিশেষ উদ্ধার পূর্বক জব্দ করে।
গ্রেফতারকৃত তদন্তে প্রাপ্ত আইনের সাথে সংঘাতে জড়িত ০১ জন কিশোর অপরাধীকে ফৌঃ কাঃ বিঃ আইনের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদানের জন্য বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হবে।
আটককৃত তদন্তে প্রাপ্ত আইনের সাথে সংঘাতে জড়িত কিশোর ফেরদৌসকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, ফ্রি ফায়ার খেলায় ভিকটিম সাব্বির(১৫) ফেরদৌসের নিকট পরাজিত হয়ে তাকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে। আইনের সাথে সংঘাতে জড়িত ফেরদৌস তাকে উপযুক্ত প্রতিশোধ নেওয়ার প্রতিজ্ঞা করে। পরিকল্পনা মোতাবেক গত ০৯/০১/২০২৩ তারিখ অনুমান ১৪:৪৫ ঘটিকার সময় শিশু বায়জিদের মাধ্যমে ভিকটিম সাব্বিরকে ডেকে নিয়ে আসে। গ্যারেজের মধ্যে বসে সাব্বির গেম খেলা অবস্থায় ফেরদৌস পিছন থেকে গামছা গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ গ্যারেজের খাটের পাশে কম্বল দিয়ে ঢেকে রাখে। ভিকটিম সাব্বিরের ভ্যান গাড়ীটির ছোট ছোট করে ভাঙ্গারীর ক্রাতার নিকট বিক্রি করেছে এবং ০৪ (চার) ব্যাটারী আলামিনের ভ্যানে করে নিয়ে গিয়ে এখলাছের ভাঙ্গারীর দোকানে বিক্রিয় করে। গত ১০/০১/২০২৩ তারিখ রাত অনুমান ০২:০০ ঘটিকার সময় পার্শ্ববর্তী শেখ ওবায়দুর রহমান এর নির্মিত গোডাউনের নিচে লাশ ফেলে দিয়ে আর্বজনা দ্বারা ঢেকে রাখে। ১০/০১/২০২৩ তারিখ সকালে নারায়নগঞ্জে চলে যায়।
গ্রেফতারকৃতকে ফৌঃ কাঃ বিঃ আইনের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদানের জন্য বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়।