ইমাম হাছাইন পিন্টু, নাটোর॥ নাটোর ও লালপুরে ককটেল বিস্ফোরণ ও বিস্ফোরক উদ্ধারের ঘটনায় বিএনপির প্রায় ২০০ নেতা কর্মীর বিরুদ্ধে নাশকতা ও বিস্ফোরক আইনে পৃথক তিনটি মামলা হলেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে মাত্র একজনকে। সদর থানায় দায়ের করা মামলায় ওহাব মন্ডল নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি উপজেলার ডাঙ্গাপাড়া এলাকার বাসিন্দা।
এসব মামলায় সদর উপজেলার দীঘাপতিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ ও সাধারণ সম্পাদক আবু হাশেমসহ ৩০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ১৫০ জন এবং লালপুর উপজেলার গোপালপুর পৌর বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক মেয়র নজরুল ইসলাম মোলামকে প্রধান আসামি করে আট জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। এই মামলা দায়েরের পর থেকে বিএনপি নেতাকর্মীরা গাঢাকা দিয়েছেন। বিএনপি নেতাদের দাবি, এটি সরকারের খেলা। নাটক সাজিয়ে আগামী ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে বিএনপির সমাবেশ বাতিলের চেষ্টা করছে।
সদর উপজেলার ডাঙ্গাপাড়া বাজার এলাকায় গত ২১ নভেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে ৫টি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। পরে ৯৯৯ থেকে ফোন পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আব্দুর রাজ্জাক নামে এক ব্যক্তির নির্মাণাধীন ভবন থেকে ৮টি তাজা ককটেল উদ্ধার করে। এসময় রাজ্জাকের ভাই বিএনপি কর্মী ওহাব মন্ডলকে ধরে পুলিশে দেয় আওয়ামীলীগ কর্মীরা। পরে রবিউল প্রামাণিক নামে স্থানীয় এক আওয়ামীলীগ কর্মী ৩০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১৫০ বিএনপি কর্মী সমর্থকদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এঘটনায় সদর থানার পুলিশের পক্ষ থেকে কোন মামলা করা হয়নি। অপরদিকে ১৯ নভেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে লালপুর উপজেলার গোপালপুর বাজার বটতলার উপজেলা ও পৌর বিএনপির কার্যালয়ের সামনে থেকে বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়। এঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে বিস্ফোরক আইনে ও যুবলীগ কর্মী নেওয়াজ শরীফ বিকি বাদি হয়ে সন্ত্রাস আইনে একটি মামলা করেন। এই দুটি মামলায় ২৫জনকে আসামি করা হয়েছে। তবে এসব মামলায় কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।
জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক শহিদুল ইসলাম বাচ্চু বলেন, ডাঙ্গাপাড়ায় বিএনপির কোনো বৈঠক ছিলনা। এছাড়া লালপুরের গোপালপুরে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে থেকে বিস্ফোরক উদ্ধারের আগেই আওয়ামীলীগ হামলা চালিয়ে বিএনপির নেতা কর্মীদের অফিস থেকে তাড়িয়ে দেয়া হয়। বিএনপিকে হয়রানি করতেই এমন নাটক সাজানো হয়েছে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেছেন, সরকার বিএনপির সমাবেশ রুখতে এতদিন বাস ধর্মঘট,পথে পথে বিএনপি নেতা কর্মীদের ওপর হামলা করেছে। কিন্তু গণজোয়ার ঠেকাতে কোন কিছুতেই সফল হয়নি। নতুন করে গায়েবি মামলা দিয়ে বিএনপির সমাবেশ বাধাগ্রস্ত করতেই সরকারের এই নাটক। কিন্তু কোন কিছু করেই গণজোয়ার ঠেকানো যাবেনা। কারণ মহাসমাবেশ এখন সাধারণ জনগণের।
নাটোরের পুলিশ সুপার সাইফুর রহমান গনমাধ্যমকে বলেন, মামলা হলেই তা গ্রহণ করা হবে। আর এইসব মামলার আসামিদের ধরতে প্রতিনিয়ত অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। কোন ধরনের শৈথিল্য করা হচ্ছেনা।