আশরাফুজ্জামান গোপালগঞ্জ॥ কাশিয়ানি উপজেলার ভাটিয়াপাড়ায় বাসটার্মিনাল না থাকায় ঝুকিতে যাত্রী সেবা, ফলে বাড়ছে জনদুর্ভোগ ও দুর্ঘটনা।
অনিয়ম করাটাই৷ কি নিয়মে পরিনত হয়েছে? বাস টার্মিনাল না থাকায় বাস থামছে ব্যস্ততম মহা সড়ককে, সড়ক ই ব্যবহার করা হচ্ছে বাসটার্মিনাল হিসেবে। ফলে প্রতি মূমুর্ত ঝুকিতে থাকতে হচ্ছে যাত্রীদের গাড়ি মালিকদের।
গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলার ভাটিয়াপাড়া ষ্টান্ডের যাত্রী, বাস-ট্রাক- অটোরিকশা চালকদের বহু বছরের দাবি একটি বাস টার্মিনাল। স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও যাত্রীবাহী বাস, ট্রাক, অটোরিকশা, পণ্যবাহী যানবাহন জন্য নেই কোনো সুনির্দিষ্ট স্টেশন বা টার্মিনাল। বাধ্য হয়েই ঢাকা-খুলনা মহাসড়কেই থামছে যাত্রীবাহী বাসসহ পণ্যবাহী ট্রাকগুলো। ফলে বাড়ছে যানজট, জনদুর্ভোগ ও দুর্ঘটনা
ঢাকা-খুলনা মহাসড়কটি অর্থনৈতিকভাবে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। জনসাধারণ ও ব্যবসায়ী ও যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড় থাকে ভাটিয়াপাড়া মোড়ে। উপজেলার পার্শ্ববর্তী উপজেলা হচ্ছে নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলা, ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গা উপজেলা। ব্যবসা, চাকরি, চিকিৎসাসহ বিভিন্ন কারণে প্রতিদিনই ভাটিয়াপাড়ার ওপর দিয়ে হাজার হাজার মানুষ দেশের বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াত করছে।
ভাটিয়াপাড়া হয়ে ঢাকা-খুলনা মহাসড় ও ব্যাসপুর- গোপালগঞ্জ, মুকসুদপুর -কালনা, ভাটিয়াপাড়া- যশোর এবং ভাটিয়াপাড়া- খুলনায় প্রতিদিন শত শত লোকাল বাস সহ দূরপাল্লার পরিবহন চলাচল করে। অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রয়োজন নির্দিষ্ট বাস টার্মিনাল।
পরিরহন ও লোকাল বাসচালক বলেন, খুলনা বা যশোর থেকে গাড়ি চালিয়ে ভাটিয়াপাড়া- আসার পর গাড়ি পার্কিং করার জন্য জায়গা পাই না। তাই রাস্তার মাঝেই গাড়ি পার্কিং করতে হয়, এতে যাত্রীসহ আমাদের অনেক সমস্যা হয়।
আরো কয়েক জন চালকের সাথে কথা বললে তারা বলেন , গাড়ি পার্কিং করার জন্য জায়গা নেই, তাই বাধ্য হয়ে আমাদের মহাসড়কে গাড়ি পার্কিং করতে হয়। এমনকি রাস্তার পাশে সরকারি জায়গা অবৈধভাবে দখল করে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ব্যবসা করছে। ফলে রাস্তার পাশেও গাড়ি পার্কিং করতে বাধাগ্রস্ত হতে হচ্ছে। নির্দিষ্ট টার্মিনাল হয়ে গেলে এ সমস্যার একটা স্থায়ী সমাধান হবে।
দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাসের টিকেট কাউন্টার ম্যানেজাররা বলেন, টার্মিনাল না থাকায় আমাদের কোনো স্থায়ী টিকেট কাউন্টার নেই, ফলে মহাসড়কের পাশেই ঝুঁকি নিয়ে ঘর তুলে টিকিট বিক্রি করতে হচ্ছে। ফলে প্রত্যেক গাড়ির টিকেট কাউন্টারের দায়িত্বে থাকা কর্মচারী এবং যাত্রীদের প্রতিনিয়তই ঝুঁকিতে থাকতে হচ্ছে।
অন্যদিকে পণ্যবাহী যানবাহনগুলোর পণ্য লোড-আনলোড করার জন্য নির্ধারিত স্থান নেই অটোরিকশার জন্য নির্দিষ্ট কোনো টার্মিনাল না থাকায় তারাও লোড-আনলোডের জায়গা ব্যবহার করছে, যে কারণে পণ্যবাহী যানবাহনগুলোও বাধ্য হয়েই মহাসড়কেই পণ্য ওঠানামা করছে।
মালিক সমিতি, শ্রমিক ইউনিয়ন ও টিকিট কাউন্টার সমিতির নেতৃবৃন্দ বলেন, টার্মিনাল আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি। ভাটিয়াপাড়া একটা টার্মিনাল হলে বানিজ্যিকভাবে উপজেলাটির উন্নয়ন হবে। মহাসড়কের যানযট হ্রাস পাবে। দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।
কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন- বাস টার্মিনাল চাওয়া একটা যৌক্তিক দাবি। বাস টার্মিনালের জন্য একটা জায়গা নির্ধারণ করা যায় কি- না উর্দ্ধতনদের সাথে আলোচনা করে ব্যবস্থা গ্রহন করবো। তবে টার্মিনাল নির্মাণ হচ্ছে একটি মেঘা প্রজেক্ট যেটি উপজেলা পরিষদ বা প্রশাসনের আওতার মধ্যে পড়ে না। সড়ক ও জনপদ বিভাগ বাস টার্মিনাল করার ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহন করতে পারে।
টার্মিনালের ব্যাপারে গোপালগঞ্জ জেলার সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী, মোহাম্মদ জাহিদ হোসেন বলেন, ইতোমধ্যে ঢাকা-খুলনা, ঢাকা- বেনাপল মহাসড়কের ছয় লেনের কাজ অনুমোদিত হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে দরপতনের মাধ্যমে কাজ শুরু হবে। এছাড়া,ভাটিয়াপাড়া- বাস রাখার জন্য একটা বাস টার্মিনাল করার পরিকল্পনা আছে।