মোঃ আনোয়ার হোসেন ডিমলা, নীলফামারী॥নীলফামারী ডিমলা উপজেলার টেপাখরিবাড়ি ইউনিয়নে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে রাতে পুকুরে বিষ প্রয়োগ করে প্রায় আড়াই লাখ টাকার মাছ নিধন করেছে দুর্বৃত্তরা।
বুধবার গভীর রাতে ওই ইউনিয়নের কলোনী পাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, মৎস্যচাষি রুহুল আমিন (সাবেক সেনা সদস্য)সে আয়ের উৎস হিসাবে ৫/৬ বছর যাবৎ বাড়ির পাশে এক একর জমিতে ব্যবসার পাশাপাশি চারটি পুকুর খনন করেন। দীর্ঘদিন ধরে ওই পুকুরে মাছচাষ করেই জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন ।
ভুক্তভোগী পরিবারটির অভিযোগ, পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষের লোকজন আমার পরিবারকে বিভিন্নভাবে ক্ষতি করার চেষ্টা চালায়। সরাসরি ক্ষয়ক্ষতি করতে না পেরে গত বুধবার (৮ই ডিসেম্বর) রাতের আধারে চুপিসারে পুকুরে বিষ প্রয়োগ করে তারা। এতে পুকুরে থাকা রুই,কাতল,মৃগেল সহ অন্যান্য প্রজাতির প্রায় ১২-১৩ মণ মাছ বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ২ থেকে আড়াই লাখ টাকা।
মৎস্য চাষী রুহুল আমিন বলেন, আমার পুকুরের পার্শ্ববর্তী মৃত যদু মিয়ার ছেলে মো. আলহাজ্ব আব্দুল আজিজ (অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক) এর সাথে পুকুরের দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা মোশাররফ হোসেনের সাথে জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলমান। আব্দুল আজিজ মোশাররফ হোসেনকে পুকুর দেখাশোনার দায়িত্ব থেকে বাদ দিতে বলেন। আমি অপারগতা প্রকাশ করলে গত ৩০/৭/২২ইং তারিখ আমার পুকুর পাড়ে এসে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং আমাকে দেখে নেবেন বলে হুমকি দেন তিনি। নিজের নিরাপত্তায় গত ৮/৮/২২ইং তারিখ ডিমলা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করি। সাধারণ ডায়েরি করায় আব্দুল আজিজ গং আরো ক্ষিপ্ত ও বেপরোয়া হয়ে ওঠে আমার উপর। নানাভাবে ক্ষতি করার জন্য উঠেপড়ে লাগে। এছাড়াও পুকুরে ব্যবহৃত বৈদ্যুতিক মোটর চুরি সহ বিভিন্নভাবে আমার ক্ষতি করে আসছে। গত বুধবার রাতে তারাই আমার পুকুরে বিষ দিয়েছে। এতে আমার পুকুরে থাকা ১২-১৩ মণ মাছ মারা গেছে। ঋণের টাকা নিয়ে মাছ চাষ করেছি। এখন আমার কী হবে! তারা আমাকে রাস্তায় নামিয়ে দিলো। গত দুই বছর মাছ চাষ করে মূলধন তুলতে পারিনি। এবার একটু আশার আলো দেখেছিলাম তা আর হলো না।আমি ঋণের টাকা শোধ করবো কিভাবে!
মুঠোফোনে আব্দুল আজিজ মাস্টারের সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, এগুলো প্রোপাগান্ডা। নিজেই নিজের পুকুরে বিষ প্রয়োগ করে আমার নামে বদনাম রটানো হচ্ছে। আমি অন্যের পুকুরে বিষ প্রয়োগ করতে যাব কেন?
প্রতিবেশি আব্দুল কাদের ও দুলাল মিয়া বলেন, রুহুল আমিন ভাই শ্যালো মেশিন পার্টসের ব্যবসার পাশাপাশি মাছচাষ করেই জীবিকা নির্বাহ করেন। কে বা কারা রাতের আধারে তার পুকুরে বিষ প্রয়োগ করেছে। তার পুকুরে থাকা বেশির ভাগ মাছ মারা গেছে। যারা এ কাজ করেছে তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শামীমা আকতার বলেন, পুকুরে বিষ প্রয়োগের কথা শুনেছি। গয়াবাড়ি ইউনিয়ন (লীফ) ইউনিয়ন মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মী আব্দুর রহমানকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে প্রকৃত ঘটনা জানার জন্য।
এ বিষয়ে ডিমলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লাইছুর রহমান বলেন, মৎস্যচাষি থানায় এসেছে অভিযোগ দিলেই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।