নিজস্ব প্রতিবেদক : ফটিকছড়িতে এক নামে পরিচালিত হচ্ছে দুই সংগঠন, যা নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্য মিশ্র প্রতিক্রিয়া ও বিরুপ মনোভাব সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে ফটিকছড়ি উপজেলা বৌদ্ধ সমাজের বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বিষয়টি পরিষ্কার করার জন্য গণমাধ্যমে প্রকৃতঘটনা স্পষ্ট করেছেন।
বিগত ২০১২ সালে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার অঞ্জনা খান মজলিস মহোদয়ার অনুপ্রেরণায় ফটিকছড়ি উপজেলা বৌদ্ধ সমাজ সংগঠনটি প্রতিষ্ঠিত হয়। দীর্ঘ ১২ বছর যাবৎ আহ্বায়ক কমিটির নেতৃত্বে মনগড়াভাবে জবাবদিহিতা ছাড়া বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট, ধর্ম মন্ত্রণালয় এবং বিভিন্ন ঐচ্ছিক তহবিলের প্রাপ্ত সরকারী অনুদানসহ নামে বেনামে বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের অর্থ আত্মসাৎ করা হয়। যার প্রেক্ষিতে ফটিকছড়ির সর্বস্তরের বৌদ্ধ জনসাধারণ তাদের দূর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে সোচ্ছার হলে ০১/০৪/২০২৪ ইং তারিখ উক্ত মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট কমিটি বিলুপ্তির ঘোষণাপত্র দাখিল করেন। অত:পর আহ্বায়ক কমিটি গঠনের মাধ্যমে ফটিকছড়ি উপজেলাধীন ২৬টি বৌদ্ধ বিহার কমিটির সমন্বয়ে ০৪/০৪/২০২৪ ইং তারিখ উপজেলা শফিকুন নূর মাওলা বীর প্রতীক হলে প্রায় ৭/৮ শত বৌদ্ধ নর-নারী তথা বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ বর্তমান উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয়ের উপস্থিতিতে ত্রি-বার্ষিক সম্মলনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক নিয়মে যথাযথ সাংগঠনিক উপায়ে ফটিকছড়ি উপজেলা সম্মিলিত বৌদ্ধ সমাজ (২০২৪-২০২৭) গঠিত হয়।
বর্তমান কমিটি গঠিত হওয়ার পর থেকে সাংগঠনিক কাজের ধারাবাহিকতায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয়কে অবহিত করে সাম্প্রতিক বন্যা কবলিত এলাকায় ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ এবং ক্ষতিগ্রস্থ বাড়ীঘর পুনঃনির্মাণে প্রায় ৫ লক্ষ টাকারও অধিক বিভিন্ন ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়। যাহা বিভিন্ন মিডিয়া ও সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়।
সংগঠনের ধারাবাহিকতার স্বার্থে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয় বিগত কমিটিকে হিসাব নিকাশ ও ব্যাংক একাউন্টসহ যাবতীয় নথিপত্র বর্তমান কমিটিকে বুঝাইয়া দেওয়ার নির্দেশ প্রদান করার সত্বেও অদ্যাবধি পর্যন্ত কোন প্রকার হিসাব- নিকাশ প্রদান না করে বর্তমান কমিটির বিরুদ্ধে গ্রামে গ্রামে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে। তারই অংশ হিসাবে ১০/১৫ জন ব্যক্তিকে একত্রিত করে ভুঁয়া স্বাক্ষর গ্রহণের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে বর্তমান কমিটির সভাপতি ভারতে চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় বর্তমান কমিটির বিরুদ্ধে অনাস্থা জানিয়ে ০৩/১০/২০২৪ ইং তারিখে একটি স্মারকলিপি প্রদান করিলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয় বর্তমান কমিটিকে কার্যক্রম স্থগিত রাখার নির্দেশ প্রদান করেন।
১২/১০/২০২৪ ইং তারিখে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয়ের নিকট আবেদনের প্রেক্ষিতে উক্ত স্থগিত আদেশ প্রত্যাহার করে বর্তমান কমিটিকে সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালনা করার পুনঃআদেশ প্রদান করেন। এমতাবস্থায় গত ২৫/১০/২০২৪ ইং তারিখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিলক্ষিত হয় যে, বর্তমান কমিটির প্যাড ও লগু ব্যবহার করে একই নামে কতিপয় অসাধু ব্যক্তি একটি আহ্বায়ক কমিটির তালিকা প্রকাশ করেন । যাহা সম্পূর্ণ অবৈধ, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। প্রকাশিত আহ্বায়ক কমিটির কয়েকজন ব্যক্তি জেলে অন্তরীন ও ফৌজদারী মামলার পলাতক আসামী। এহেন ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত অবৈধ আহ্বায়ক কমিটি ফটিকছড়ি উপজেলা সম্মিলিত বৌদ্ধ সমাজ-এর ভাবমূর্তি ক্ষণসহ শান্তিপ্রিয় বৌদ্ধদের সুনাম বিনষ্ট করছে। এর মাধ্যমে সমাজের সকল স্তরের মানুষের মধ্যে বিরোপ প্রতিক্রিয়াসহ নানা ধরনের বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। যাহা অনাকাঙ্খিত ও অনাভিপ্রেত। এহেন কর্মকান্ডের জন্য ফটিকছড়ি উপজেলা সম্মিলিত বৌদ্ধ সমাজ এবং আপামর বৌদ্ধ জনসাধারণের পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং এই ধরনের গর্হিত কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানিয়েছেন সংগঠনটির সভাপতি অঞ্জন কুমার বড়ুয়া ও সাধারণ সম্পাদক রিটন বড়ুয়া।