রতন দে, মাদারীপুর প্রতিনিধি॥ মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের পূর্ব বনগ্রামের মনাই মাতুব্বরের ছেলে মোঃ সোহেল মাতুব্বরকে ইতালি নেয়ার কথা বলে লিবিয়া নিয়ে নির্মম নিযার্তনের অভিযোগ উঠেছে একই গ্রামের লতিফ বেপারীর ছেলে দালাল মোঃ অলিল বেপারীর বিরুদ্ধে।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী পরিবার আজ শনিবার সকালে ডাসার উপজেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন।
ভুক্তভোগী সোহেল মাতুব্বর জানান,গত রমজান মাস থেকে প্রায় ১০ মাসে বিভিন্ন মেয়াদে আমার কাছ থেকে সাড়ে ২২ লক্ষ টাকা নিয়েছে। লিবিয়ায় আমাকে গেমকরার কথা বলে তিনবার মাফিয়ার কাছে বিক্রি করে,আর নিযার্তন করে টাকা আদায় করে।
পরে আমার পরিচিত লোকের মাধ্যমে এক লক্ষ টাকার বিনিময় নির্মম নিযার্তন সহ্য করতে না পেরে দেশে ফিরে আসি। আমার মত এরকম আর চার-পাচ জন আছে,তারা এখনও লিবিয়ায় মাফিয়াদের হাতে বন্ধি রয়েছে। আমার পরিবার আজ দালাল অলিল বেপারী শেষ করে দিয়েছে। ভিটে মাটি যা ছিল,সব বিক্রি করে পরানটা নিয়ে বাড়ি ফিরছি।
আমার স্ত্রী, তিনটি মেয়ে নিয়ে আমি এখন মানবতার জীবন-যাপন করতেছি। সরকারের কাছে আবেদন অতিদ্রুত আমার টাকা ফেরত সহ দালাল অলিল ও তার শাশুড়ি মাহিনুর বেগম এর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি। আমি তাদের বিরুদ্ধে মামলা করব।
সোহেল মাতুব্বরের পিতা মনাই মাতুব্বর বলেন, আমার ছেলেকে আট লক্ষ টাকায় ইতালি পৌছে দেয়ার কথা বলে অলিল বেপারী ও তার শাশুড়ি মাহিনুর বেগম। পরে লিবিয়া নিয়ে আমার ছেলে সোহেলকে মাফিয়াদের কাছে বিক্রি করেন। পরে আমার ছেলের কোন সন্ধান পাইনা। হঠাৎ একদিন রাতে মোবাইলে ফোন আসলে রিসিভ করে ছেলের কান্না শুনতে পাই এবং ওই পাশ থেকে বলে ছেলেকে বাঁচাতে চাইলে আরও নয় লাখ পয়ত্রিশ হাজার টাকা দে। পরে ছেলেকে বাঁচাতে জায়গা জমি বিক্রি করে আবার টাকা দেই।
এমন করতে করতে পোলাটার জানঢা ফিরাই আনছি। তার আরেক জনের মারফতে এক লাখ দিয়া দেশে আনছি। এখন আমি বিচার চাই। আমার টাকা পয়সা ফেরত চাই,আমার প্রায় সাড়ে ২২ লাখ টাকা গেছে।
কালকিনি উপজেলা মৎসজীবী লীগের সহ সভাপতি মোঃ ওসমান সরদার বলেন,ঘটনা মমার্ন্তিক লোব লালসা দিয়া এই অলিল বেপারী অনেক লোককে নিঃস্ব করে ফেলছে,আমার ভাগ্নাও আছে,বার বার গেমে নিয়া টাকা নিছে। পরে এর আত্মীয় সজন কান্নাকাটি করে,আবার অলিলের বাড়ি গেছি। পরে এরা নেই নিছি, এরকম বলে। এক পর্যায়ে সোহেল জানটা বাঁচিয়ে দেশে ফেরত আসে।
এরকম বার বার জায়গা জমি বিক্রি করে টাকা দিয়া একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযুক্ত দালালের শাশুড়ি মাহিনুর বেগম বলেন, আমার জামাই লোক ঠিক করে দিছে, এরা সবাই টাকা দিছে। অলিল টাকা নেয়নি।
এ ব্যাপারে ডাসার থানার ওসি(তদন্ত)মোঃ মনজুরুল ইসলাম বলেন, আমরা এখনও অভিযোগ পাইনি,অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যাবস্থা নিব।