মোঃ ফিরোজ আহমেদ, পাইকগাছা: খুলনার পাইকগাছা উপজেলার দ্বীব বেষ্টিত দেলুটির কালিনগর ওয়াপদার বাঁধে ৪’শ মিটার এলাকায় ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়েছে। ফলে বিগত বছরে ন্যায় যেকোনো মুহূর্তে বাঁধ ভেঙ্গে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। এ কারণে চরম ঝুঁকিতে রয়েছে ২২নং পোল্ডারের ১৩ টি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ।
গত বছর ভাঙনের কারণে দেলুটি ইউনিয়নের প্রায় ১৩টি গ্রাম দীর্ঘ দুই মাস পানির নিচে ছিল। ভেসে যায় প্রায় ৫০০ ঘের-পুকুর, ৯৫০ হেক্টর আমন ধানক্ষেত, ২২৫ হেক্টর ধানের বীজতলা ও ২৫ হেক্টর জমির সবজি ক্ষেত। এতে প্রায় ১০ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছিল।
এলাকাবাসী জানায়, প্রতিবছর অতি বর্ষণে প্রবাল স্রোতে ভাঙ্গনের ফলে তলিয়ে যায় শত শত ঘরবাড়ি। উপজেলার দেলুটি ইউপির ২২ নং পোল্ডার বটিয়াঘাটা ও দাকোপ উপজেলার সীমান্তবর্তী ইউনিয়নের একটি অংশ। ৫ টি ওয়ার্ডের ১৩ টি গ্রাম নিয়ে ২২ নং পোল্ডারের ওই এলাকায় ১০ হাজারের অধিক মানুষ বসবাস। তরমুজ সহ অন্যান্য কৃষি ফসলের জন্য ২২ নং পোল্ডার অত্যন্ত সমৃদ্ধ। প্রতি বছর এখানে কোটি কোটি টাকার তরমুজ ও অন্যান্য কৃষি ফসল উৎপাদন হয়ে থাকে। পোল্ডারের চারিপাশে নদী থাকায় এবং টেকসই বেড়িবাঁধ না থাকায় চরম ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করেন এখানকার মানুষ। প্রতি বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগে দুর্বল বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে প্লাবিত হয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় এখানকার জনসাধারণের। গত বছরের ২২ আগস্ট একই এলাকার বাঁধ ভেঙ্গে ২২ নং পোল্ডার সম্পুর্ণ তলিয়ে গিয়ে দীর্ঘদিন পানি বন্দী হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করতে হয়েছিল এখানকার মানুষের। তেমন কোন আশ্রয় কেন্দ্র না থাকায় রাস্তায় বসবাস করতে হয় হাজার হাজার মানুষের। বিগত ২০ বছর ধরে এখানে ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে। ইতোপূর্বে হাজার হাজার বিঘা ফসলি জমি এবং অসংখ্য ঘরবাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। গত বছর বাঁধের যেখানে ভেঙ্গে গিয়েছিল তার ঠিক এক কিলোমিটার উত্তরে এবছর ও কালিনগর সাধু ঘাটের অমল কবিরাজের বাড়ি হতে প্রভাষ মন্ডলের বাড়ি পর্যন্ত ৪’শ মিটার এলাকা জুড়ে বাঁধে ভাঙ্গন এবং কোথাও কোথাও বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। যার ফলে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কায় উদ্বেগ আর উৎকন্ঠার মধ্যে রয়েছে এলাকার মানুষ। মেরামত সহ ভাঙ্গন রোধে জিও ব্যাগ স্থাপন জরুরি মনে করছে ঝুঁকিপূর্ন এলাকার মানুষ।
কৃষক সহিল উদ্দিন জানান, বাঁধ ভেঙে গেলে ফসল পানিতে তলিয়ে যাবে, আমরা পথে বসে যাব।
এই আশঙ্কার কারণে কৃষকরা দিন-রাত অস্থির সময় পার করছেন। তাদের দাবি, দ্রুত টেকসই বাঁধ নির্মাণ না হলে কৃষির পাশাপাশি খাদ্য নিরাপত্তাও হুমকির মুখে পড়বে।
দেলুটি ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সুকুমার কবিরাজ বলেন, ত্রাণ নয়, টেকসই বেড়িবাঁধের দাবি আমাদের। মেরামতসহ ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ স্থাপন করে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানিয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষ। পাইকগাছা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ সহকারী প্রকৌশলী মো.রিয়াজুল উল আজাদ জানান, টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করার দাবি দীর্ঘ দিনের। কিন্তু পর্যাপ্ত অর্থের অভাবে সম্ভব হচ্ছে না। ভাঙ্গন এলাকা গুলোতে মেরামতের কাজ চলছে। বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের খুলনা জেলা দক্ষিণের সভাপতি এ্যাডঃ রুহুল আমিন বলেন দেলুটি ইউনিয়নের বাসিন্দারা অনেক কষ্ট হয় জীবন যাপন করেন তিনি সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আসুহস্তক্ষেপ কামনা করছেন।




















