পাথরঘাটা বরগুনা প্রতিনিধি॥ বরগুনার পাথরঘাটায় বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট সগির হোসেন লিয়নের বাড়িতে ২৭ শে নভেম্বর ডাকাতির ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসাবে পাথরঘাটা উপজেলা কালমেঘা ইউনিয়নের দক্ষিণ কুপদোন গ্রামের নুর মোহাম্মদ এর ছেলে জসিম উদ্দিন কে, ৩০ শে নভেম্বর সন্ধ্যা সাতটার দিকে পূর্ব কালমেঘা মোসলেম মাস্টার বাড়ি বাজার থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরের দিন ঐ এলাকার গ্রামবাসী তাকে নির্দোষ দাবি করে সকাল দশটায় তার মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন করে।
এসময় উক্ত মানববন্ধনে অ্যাডভোকেট সগির হোসেন লিওনের আপন ভাই মোঃ গনি, চাচাত ভাই তানজির ও চাচা জাহাঙ্গীর হোসেন (সাবেক মেম্বর) উপস্থিত ছিলেন। আপন ভাই গনি বলেন, মানববন্ধনে বক্তারা আটককৃত ব্যক্তি জসিম উদ্দিনের পক্ষে বক্তব্য রাখেন এবং আপন ভাই শোঃ গনি জসিম উদ্দিনের পক্ষে সাফাই গেয়ে বলেন, আমার ভাই এডভোকেট সগির হোসেন লিওনের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় ঐ দিন আমি, চাচা, চাচাত ভাই তানজির ও জসিম মোসলেম মাস্টার বাড়ি বাজারে ইসমাইলের দোকানে বিশ্বকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের আর্জেন্টিনা ও পোল্যান্ড এর মধ্যকার খেলাটি দেখছিলাম।
দোকানদার ইসমাইল বলেন, আমাদের এলাকয় তখন জাঁকজমক পূর্ণ পরিবেশ অবস্থান করছিল ঐদিন, আমরা এলাকাবাসী মিলে পিকনিকের ব্যবস্থা করি, জসিম ও আমাদের সাথে আনন্দ করছিল এক সঙ্গে রাত ৪টার দিকে পিকনিকের খাওয়া-দাওয়া করি, কিভাবে জসিম ডাকাতি করল ১০ কিলোমিটার দূরে তা আবার রাত ৩-৪টার দিকে, এ বিষয়টা প্রশ্নবিদ্ধ।
গ্রেফতারকৃতর ভাই জসিম বলেন, ঐ সময় খেলা শেষে আমরা পিকনিকের আয়োজন করি রান্নাবান্না শেষে, খেতে খেতে ঘড়িতে তখন রাত চার টা। কিন্তু আমার ভাইয়ের বাসায় ডাকাতি হয় রাত ৩-৪ টার মধ্য। তখন জসিম উদ্দিন আমাদের সাথে পূর্ব কালমেঘা মোসলেম মাস্টার বাড়ি বাজারে অবস্থান করে। তাহলে জসিম কিভাবে আমার ভাইয়ের বাসায় ডাকাতি করল? এটা ষড়যন্ত্র। তাকে গ্রেফতার করে আমার ভাইয়ের বাসায় ডাকাতি ঘটনা অন্যদিকে প্রবাহিত করতে একটি দ্বিতীয় জজ মিয়া নাটক সাজানো হচ্ছে।
উল্লেখ্য পাথরঘাটা পৌর শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের হাজী জালাল উদ্দিন মহিলা কলেজের সামনে শনিবার ভোর রাত তিনটা থেকে চারটা পর্যন্ত এঘটনা ঘটনায়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় কাউন্সিলর মঞ্জুর রশিদ সুমন।
অ্যাডভোকেট সগির হোসেন লিয়ন বরগুনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী।
জানা যায়, শনিবার রাতের খাবার খেয়ে সগির হোসেন লিয়নের বাবা আব্দুর রাজ্জাক, মা আমেনা বিবি, বোন সাবিনা বেগম, ভাইজি রিভা ও ভাগিনা সাদিক রাতের খাবার খেয়ে রাত সাড়ে এগারোটার দিকে ঘুমিয়ে যায়। এরপর রাত আড়াইটার দিকে একটি বিকট শব্দ পেয়ে ঘুম থেকে জেগে ঘরের লাইট জ্বালিয়ে সব কিছু ঠিকঠাক দেখে আবার ঘুমিয়ে পরে। রাত তিনটার দিকে জানলার গ্রীল কেটে ঘরে প্রবেশ করে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে জিম্মি করে।
সাবিনা বেগম জানান, ঘরে প্রবেশ দেশীয় অস্ত্রের মুখে আমার বাবা আব্দুর রাজ্জাক ও ভাইয়ের মেয়ে ইভাকে বেঁধে গলায় রামদা ধরে আধুনিক কাঁটার মেশিন দিয়ে আলমারির তালা কেটে নগদ টাকা, আড়াইভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়। এছাড়াও একটি এলইডি টিভি ও তিনটি কম্বল নিয়ে যায়। তিনি আরো জানান, ছয়জন মুখোশ পরে ঘরে প্রবেশ করে। তবে তাদের কাউকে চিনতে পারেননি।
কাউন্সিলর মঞ্জুর রশিদ সুমন জানান, বাড়ির মুল ফটকের গেট ভেঙ্গে ঘরের গ্রীল কেটে সংঘবদ্ধ চক্র ঘরে প্রবেশ করে। ডাকাতরা সাউন্ড লেস কাঁটার মেশিন ব্যাবহার করে তালা কেটেছে। এর আগে পাথরঘাটা পৌর শহরে এমন ঘটনা ঘটেনি।
এ বিষয়ে পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি (তদন্ত) সঞ্জয় মজুমদার জানান, ঘটনা স্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। যথাযথ গুরুত্ব দিয়েই বিষয়টির তদন্ত চলছে।