বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধি॥ বড় মসজিদের ফজরের ওয়াক্তের পড় মসল্লিগন সহ এলাকাবাসী গত ২ ডিসেম্বর ভোর ৬ টায় নওগাঁ জেলার বদলগাছী উপজেলার মিঠাপুর বাজারের উত্তরে মিঠাপুর কবিরাজ পাড়ায় একটি ট্রাক দাঁড়িয়ে থাকতে দেখতে পান। ট্রাকটির গাঁজা এক ঘন্টার মধ্যে নামধারী সাংবাদিক নামে পরিচিত এর হুকুমে ও স্বেচ্ছাসেবক লিগের নেতা মিঠাপুর কবিরাজ পারার মৃত্যু মোহাম্মদ আলী কবিরাজের ছেলে বিরু কবিরাজের নেতৃত্বে মিঠাপুর বৌলা পাড়া গ্রামের মৃত কোমর উদ্দীনের পুত্র দেলোয়ার হোসেন, মৃত বাবলুর ছেলে দুর্জয় হোসেন, মৃত ফোরমান আলীর ছেলে নিরব আলী এলাকার বিভিন্ন স্হানে গোপনে সরিয়ে ফেলেন।
পরে বদলগাছী থানাপুলিশ কে খবর দিলে পুলিশ সকাল আনুমানিক ৯ টায় এস আই আঃ আলিম, আঃ রউফ, এ এস আই মিজানুর, মেহদি সহ বেশ কয়েকজন কঠোর অভিযান চালিয়ে মাটির ভিতর আলুর জমিতে পুঁতে রাখা ৪ পেটি, সহ ৯ পেটি গাঁজা উদ্ধার করে দুর্জয়, নিরব ও দেলোয়ারের মাধ্যমে। পুলিশ দেলোয়ারকে আটক করার পর অদৃশ্য কারণে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ আছে।
এলাকাবাসী সাংবাদিকদের বলেন গাঁজার মুল মহাজন, এবং লন্ঠনের মুল নায়কগন গোপনে পুলিশের কাছে দুধের মতো সাদা রুপ নিয়ে পাইচারি করছেন।
সরেজমিন তদন্তকালে, মিঠাপুর গ্রামের আঃ সালাম মিঠাপুর বাজারের হোটেল দোকানদার আলম সহ কয়েকজন বলেন গত ০২/১২/২০২২ ইং তারিখ ফযরের নামাজ পড়ে মিঠাপুর চারমাথার মোড়ে দাঁড়াতেই দেখি ভান্ডারপুরের দিক থেকে একটি ট্রাক দ্রুত গতিতে (ভেরেন্ডির) দিকে চলে গেল। আমি সরে না দাঁড়ালে ট্রাকটি আমাকে ধাক্কা দিতো। এর পরই সাদা রঙের হাই এইস মাইক্রোবাস আমার সামনে দাঁড়িয়ে ট্রাকটি কোন দিকে গেল বলে জিজ্ঞাসা করে। ট্রাকটি যে দিকে গেছে সেই দিকে উত্তর দিকে চলে যায় মাইক্রোটি। পরে জানতে পারি মিঠাপুর কবিরাজ পাড়ার দুর্জয় ও বিরুর বাড়ীর সামনে রাস্তায় ট্রাকটি ফেলে রেখে চালক সহ হেলপার কিছু মাল নিয়ে পালিয়ে যায়। স্থানীয় কতিপয় ব্যক্তি গাজার ট্রাকটি থেকে গাঁজা লুটপাট করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভোরবেলায় পাড়ার ভিতর (কবিরাজ পাড়া) দুর্জয় ও বিরুর বাড়ীর সামনে ট্রাকটি দেখে আতংকিত হয়ে পড়েন তারা। এরপর তারা জানতে পারেন ট্রাকটিতে (প্রতি বস্তায় ১২ পেটি করে ২৪ কেজি করে) ভর্তি গাঁজা আছে। গ্রামের কতিপয় ব্যক্তি সহ অচেনা কয়েকজন গাঁজাগুলো হরিলুট করে নিয়ে যায়।
খবর পেয়ে সকাল আনুমানিক ৯টার দিকে বদলগাছী থানার এসআই মেহেদী হাসান, এসআই আলিম এবং এএসআই মিজানুর রহমান সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন এবং মিঠাপুর কবিরাজ পাড়ার মৃত মামুনুর রশিদের ছেলে সোহেল ও মৃত বাবলুর ছেলে দুর্জয় ও মিঠাপুর বদি পাড়ার মৃত ফোরমান আলী সরদারের ছেলে নিরব এর নিকট থেকে ৪ পেটি, বৌলা পাড়ার মৃত কমর উদ্দিরে ছেলে দেলোয়ারের নিকট থেকে ১ পেটি গাঁজা উদ্ধার করেন। কিন্ত বস্তা বস্তা গাজা হরিলুট কারীদের কাছ থেকে দুই কেজি এক কেজি করে উদ্ধার করতে পেরেছে পুলিশ। এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে দুর্জয় তার মামা হিরোর আলুর জমি থেকে পুঁতে রাখা ৪ পেটি গাঁজা উত্তোলন করে পুলিশকে দেন। থানা পুলিশ মোট ৯ পেটি (১৮ কেজি) গাঁজা উদ্ধার করেন। কিন্ত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কতিপয় ব্যক্তি বলেন উদ্ধারের বাহিরে এলাকার কয়েক জনের বাড়ীতে কয়েক বস্তা গাঁজা রয়েছে, এবং মুল লুন্ঠন করার নেতা বহাল তবিয়তে রাজত্ব করছেন।
মিঠাপুর (কবিরাজপাড়া) গ্রামের মৃত বাবলুর ছেলে দুর্জয় (২৩) ও মৃত ফোরমান আলীর ছেলে নিরব (৩৭)কে আটক করে থানায় নিয়ে গেলেও দেলোয়ার হোসেন পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। স্হানীয় এলাকাবাসী জানান আটকৃত ২ জন হরিলুটের সাথে সম্পৃক্ত কিন্তু মূল লুন্ঠন করার হুকুম দাতা ও নেতা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে গেল। পরে থানা পুলিশ ঢাকা মেট্রো ড-১৪- ৮৭১৪) নং ট্রাক জব্দ করে থানায় নিয়ে যায়।
থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাঃ আতিয়ার রহমানের সঙ্গে তার কার্যালয়ে কথা বললে তিনি ৯ পেটি (১৮ কেজি) গাঁজা উদ্ধার (যাহার মুল্য ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা) এবং উল্লেখিত দুই জন কে আটক করে গত ৩ ডিসেম্বর জেল হাজতে প্রেরন করার কথা বলেছেন। ট্রাকটি জব্দ করে থানায় রাখা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন। এবং দুর্জয়, নিরব, সোহেল, দেলোয়ার, ট্রাক চালক জাকির হোসেন ও হেলপার আমির হামজার (কুমিল্লা)এর বিরুদ্ধে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন বলে জানান। যার মামলা নং ০২, হরিলুটের বেড়াজালে বন্দী দুর্জয় ও নিরবকে গত ০৩/১২/২০২২ ইং তারিখে নওগাঁ জেল হাজতে প্রেরণ করেছেন বলে সাংবাদিকদের জানান।
স্হানীয় মেম্বার হারুন রশীদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মুল লুন্ঠন করার হোতা ও গাঁজার মহাজন কে বা কারা সঠিক ভাবে চিহ্নিত করে আটক করার দাবী করেন। ভাইস চেয়ারম্যান ইমামুল আল হাসান তিতু বলেন নিরীহ ও নিরাপরাধকে যেন পুলিশ আটক না করে সঠিক অপরাধীকে বিচারের আওতায় আনা আহবান জানান।
উক্ত বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে রাজশাহী বিভাগীয় মফস্বল সাংবাদিক সোসাইটির সহ সভাপতি, বদলগাছী সাংবাদিক সংস্থার সহ সভাপতি দৈনিক ইনকিলাবের বদলগাছী উপজেলা সংবাদাতা এবং দৈনিক আলোকিত ৭১ সংবাদের জেলা প্রতিনিধি এনামুল কবীর এনাম মাটিতে পুঁতে রাখা গাঁজার পেটির ছবি তুলতে গেলে এ এস আই মিজানুর রহমান মিজান মোবাইল ফোনটি কেড়ে নেন।
পরের দিন ৩ ডিসেম্বর বদলগাছী সাংবাদিক সংস্থার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিক ওয়াজেদ আলীর নেতৃত্বে সকল সাংবাদিক ওসির আহবানে উপস্থিত হয়ে বি,এম,এস,এস এর বিভাগীয় সভাপতি জুয়েল আহমেদের হস্তক্ষেপে ওসি আতিয়ার রহমান গভীর দুঃখ প্রকাশ করেন এবং মিজান ও সাংবাদিক এনামুল কবীর এনামকে হাত ধরাধরি ও কোলাকুলির মাধ্যমে ভুল বুঝাবুঝির সমাধান করে মোবাইল ফোনটি ফেরত দেন।