আকিবুজ্জামিন: দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ জেলা সাতক্ষীরা। পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন, দিত্বীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর ভোমরা এই সাতক্ষীরাতে অবস্থিত। গুরুত্বপূর্ণ এই জেলাতে প্রশাসনের নজরদারির অভাবে আনাচে-কানাচে ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠেছে অসংখ্য ক্লিনিক ও নামসর্বস্ব সাইনবোর্ড খুলে ভুয়া চিকিৎসকের চেম্বার। প্রতারিত হচ্ছে গ্রামের সহজ সরল মানুষগুলো, উপকারের পরিবর্তে ভুল চিকিৎসা নিয়ে তারা আর্থিক ও শারীরিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
জানা গেছে, স্থানীয় প্রভাবশালীদের মদদে ভুয়া চিকিৎসকে ভরে গেছে সাতক্ষীরার বিভিন্ন উপজেলার হাট—বাজার, পাড়া—মহল্লা। কথিত এ চিকিৎসকদের দ্বারা খুব সহজেই প্রতারিত হচ্ছেন গ্রামের সহজ—সরল মানুষ। কিন্তু এ নিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের তেমন কোনো নড়াচড়া নেই।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাহারি ডিগ্রি সম্বলিত নানানরকম সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে রোগীদের প্রতারিত করে চলেছেন এসব ভুয়া চিকিৎসক। সব মিলিয়ে সাতক্ষীরার গ্রামে—গঞ্জে চিকিৎসা সেবার নামে চলছে চরম অরাজকতা। এই চিকিৎসকদের পাল্লায় পড়ে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে রোগীদের জীবন। এ চিকিৎসকদের ভুল চিকিৎসা, অবহেলা ও বাণিজ্যের গেঁড়াকলে পড়ে অনেক রোগী মারা যাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠছে। আবার অনেকেই তাদের দেওয়া ভুল ওষুধ সেবন করে আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানা যায়, ২০১০ সালের ৯ ডিসেম্বর সরকার ‘বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল’ নামে একটি আইন অনুমোদন দেয়। এই আইন মতে, বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল এর রেজিষ্ট্রেশন ভূক্ত এমবিবিএস ও বিডিএস পাশ করা চিকিৎসক ও ডিপ্লোমা ইন মেডিকেল ফ্যাকাল্টি(ডিএমএফ) পাশ করা রেজিষ্টাার্ড মেডিকেল এ্যসিস্ট্যান্ট ছাড়া অন্য কেউ চিকিৎসা সেবা প্রদান করতে পারবেন না। কিন্তু সাতক্ষীরার বিভিন্ন অঞ্চলে এ আইন লঙ্ঘনের চিত্র অহরহ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অনেকেই চিকিৎসা শাস্ত্রের সঠিক কোনো জ্ঞান ছাড়াই বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয় চিকিৎসা অনুষদ প্রদত্ত ডিপ্লোমা ইন মেডিকেল ফ্যাকাল্টি(ডিএমএফ) ডিগ্রি অর্জন না করেই তাদের নামের পরে ডিপ্লোমা ইন মেডিকেল ফ্যাকাল্টি(ডিএমএফ) উল্লেখ করে বিভিন্ন এলাকায় চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন ।
এ ছাড়াও বর্তমানে অনেক পল্লী চিকিৎসক রয়েছেন, তাদের কোনো প্রশিক্ষণ বা সরকারি সার্টিফিকেট নেই, ‘বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল আইন—২০১০ অনুযায়ী তাদের চিকিৎসা সেবা বা চিকিৎসা ব্যবস্থাপত্র প্রদান করার কোনো অধিকার নেই ।
এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সাতক্ষীরা এলাকার বিভিন্ন সচেতন মহল। ৩ পর্বের বিশেষ প্রতিবেদন এর ১ম পর্ব।