কাকন সরকার, শেরপুর : শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে সুদের টাকা সময়মতো পরিশোধ না করায় এক ইমামের নেতৃত্বে বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে থানা পুলিশ। এই ঘটনায় ওই গ্রামের সোহেল মিয়ার স্ত্রী রিতা বেগম বাদী হয়ে নালিতাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করে শুক্রবার (১০ অক্টোবর) দুপুরে শেরপুর আদালতে প্রেরণ করেছে। এর আগে গত বুধবার উপজেলার জামিরাকান্দা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
প্রেপ্তাররকৃতরা হলো- উপজেলার জামিরাকান্দা গ্রামের আমানউল্লাহ মুন্সির স্ত্রী সুফিয়া বেগম (৪২), মকবুল হোসনের দুই ছেলে বাবুল মিয়া (২১) ও নয়ন মিয়া (১৯) এবং অপর একজন খাদিজা বেগম (২৬)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রিতা বেগম পার্শ্ববর্তী উপজেলার পাঁচগাও গ্রাামের জামে মসজিদের খতিব আমানউল্লাহ মুন্সির কাছ থেকে শতকরা ১০ টাকা হারে মাসিক সুদে এক লাখ টাকা ঋণ নেন। তিনি নিয়মিতভাবে সুদের টাকা পরিশোধ করছিলেন। কিছুদিন আগে আসল টাকার ৫০ হাজার টাকাও পরিশোধ করেন। তবে ইমাম আমানউল্লাহ মাসে ১০ হাজার টাকা সুদ দাবি করে আসছিলেন। তার দাবি অনুযায়ী এখনো রিতার কাছ থেকে ৮০ হাজার টাকা পাওনা রয়েছে বলে জানান।
এদিকে, রিতা বেগম সুদের টাকা জোগাড় করার জন্য স্বামী-সন্তানের কাছে ঢাকায় চলে যান। এই সুযোগ বুঝে ইমাম আমানউল্লাহ মুন্সি ও তার সহযোগীরা তার বসত বাড়িতে হামলা চালায়। গত দুই দিন ধরে চলে ভাংচুর ও লুটপাটের তান্ডব চালায়। এমনকি তারা শ্রমিক ভাড়া করে এনে ঘরের টিন, কাঠ, খুঁটি, নলকূপ, গোসলখানা, রান্নাঘর, মেঝের ইট পর্যন্ত খুলে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ করেছেন রিতা বেগম। বাড়িঘর লুটপাটের খবর পেয়ে রিতা বেগম জরুরী সেবা ৯৯৯- এ ফোন করেন। একই সাথে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে ইমামের স্ত্রী ও তার সহযোগী সোহেলকে গ্রেপ্তার করে। তবে ঘটনার মূল অভিযুক্ত ইমাম আমানউল্লাহ মুন্সি পলাতক রয়েছেন।
আপরদিকে, বাড়িঘর হারিয়ে নিঃস্ব রিতা বেগম এখন মানবেতর জীবনযাপন করছেন। স্থানীয়রা এ ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোহেল রানা বলেন, এই ঘটনায় মামলা দায়ের করার পর ইতোমধ্যে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করে শুক্রবার দুপুরে শেরপুর আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। বাকি আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।




















