পাইকগাছা (খুলনা) সংবাদদাতা :
পাইকগাছা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পেশকার দীপংকর মল্লিকের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি এবং দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। আদালতের কতিপয় আইনজীবী ও মোহরাররা এ অভিযোগ করেছেন। তারা আরো জানান তার কারনে আদালতের সুষ্ঠু কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে এবং বিচারপ্রার্থীরা ও হয়রানি হচ্ছেন।
আইনজীবীরা জানিয়েছেন, দীপংকর মল্লিক আদালতের কার্যক্রম পরিচালনায় অদক্ষ ও অনভিজ্ঞ। তিনি যথা সময় আদালত খোলেন না এবং আদালত নামার পর পরই তিনি আদালত বন্ধ করেন। ফলে বিচার প্রার্থীরা ও মোহরাররা যথা সময়ে মামলার তদবির বা হাজিরা দিতে বা দিন নিতে পারেন না। সেকারন বিচারপ্রার্থীদের নিয়মিত দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। পাইকগাছায় সপ্তাহে ৩ দিন নির্বাহী কোট বসেন। তারমধ্যে সোম ও বুধবারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কোট করেন এবং মঙ্গলবারে সহকারী কমিশনার ভূমি কোট করেন। দায়িত্ব প্রাপ্ত ওই দুজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিজ নিজ দায়িত্ব ছাড়া একাধিক দায়িত্বে আছেন ও দায়িত্ব পালন করেন। সে কারন অন্য কাজে ব্যস্ত থাকায় তারা যথারীতি কোট করতে পারেন না। সেজন্য কোটটি নিয়মিত হচ্ছে না। আদালতে কোট আসেন প্রায় ৩ টার দিকে। আর পেশকার দীপংকর মল্লিক কোট খোলেন বেলা ২:৩০ মিনিটের দিকে। তাই ইচ্ছামতো আদালত খোলা ও বন্ধ করার কারনে কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
এছাড়া, তার বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগও উঠেছে। আইনি কাজের জন্য প্রয়োজনীয় নকল সরবরাহের সময়েও তিনি অতিরিক্ত টাকা দাবি করছেন এবং যথাসময়ে নকল সরবরাহ না করে বিচারপ্রার্থীদের ক্ষতি করছেন। নকল প্রতি ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা দাবি করছেন।, যা পূর্বে ছিল মাত্র ৩/৪শ টাকা। টাকা না দিলে তদন্ত রিপোর্ট প্রেরণ করেন না এবং তদন্ত রিপোর্ট আসলে টাকা না দিলে তা দেন না। এ বিষয়ে এ্যাড: চিত্তরঞ্জন সরকার বলেন যে, যথারীতি যথাসময়ে নির্বাহী কোটটি খোলা হলে ও চললে বিচার প্রার্থীদের দূর্ভোগ কমবে। তা- ছাড়া ঐ কোটে কোন নির্ধারিত বিচারক, পেশকার, কপিষ্ট টাইপিস্ট, প্রসেস সার্ভার ও অফিস সহায়ক পদে কোন নিয়োগ দেওয়া হয়নি। তাই জনবল সংকট রয়েছে। এরপর পেশকার দীপংকরের অনভিজ্ঞতা ও দূর্নিতি অনিয়মের কারনে জনগণ ভোগান্তি পাচ্ছে।
এ বিষয়ে এ্যাড: শফিকুল ইসলাম জানান, অনভিজ্ঞ ও দূর্নীতিবাজ পেশকার দীপংকর মল্লিককে অপসারণ করে নতুন একজন দক্ষ পেশকার দিলে জনগণের ভোগান্তি কম হবে। এ বিষয়ে এ্যাড: এফ.এম এ রাজ্জাক সমস্যা সমাধানের জন্য খুলনা জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করে তিনি জানান, ২০০৭ সালে নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ হয়। এরপর থেকে পাইকগাছায় কোন নির্বাহী কোট স্থাপন করা হয়নি। আইনজীবী সমিতির দুটি কক্ষ নিয়ে আদালত কার্যক্রম চালু হয় ও আছে। তবে অদ্যবধি কোন বিচারক নিয়োগ বা পেশকার, কপিষ্ট, টাইপিস্ট, প্রসেস সার্ভার ও অফিস সহায়ক পদে কোন নিয়োগ দেওয়া হয়নি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার কে দিয়ে এবং তার অফিসের একজন সাটিফিকেট সহকারীকে দিয়ে পেশকারের কাজ চলছে। তবে পেশকার দীপংকর খুলনা জেলা প্রশাসকের জে এম শাখায় কর্মরত অবস্থায় পাইকগাছা উপজেলা অফিসে বদলি হয়ে আসেন ১০-১২ বছর আগে। এরপর থেকে পাইকগাছায় চাকরি করছেন। তিনি কোর্ট পরিচালনার জন্য দক্ষ ও অভিজ্ঞ নন। সেকারণে তিনি নানা ভাবে জনগণকে হয়রানি করছেন। তাই পাইকগাছা নির্বাহী আদালতে জরুরি ভিক্তিতে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও কোট পরিচালনার জন্য অন্যান্য কর্মচারী নিয়োগের দাবী করেছেন তিনি। তিনি আরো বলেন, এটি করা হলে নির্বাহী আদালতটি প্রতি কর্মদিবসে সময় মতো খোলা ও বিচার কাজ পরিচালনা করলে বিচার প্রার্থীদের বিচার প্রাপ্তি নিশ্চিত হবে।