বাংলাদেশ সকাল
শুক্রবার , ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ২৪শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. আবহাওয়া
  5. এক্সক্লুসিভ
  6. কৃষি বার্তা
  7. ক্যাম্পাস
  8. খেলাধুলা
  9. খোলা কলাম
  10. জাতীয়
  11. ধর্ম ও জীবন বিধান
  12. নির্বাচন
  13. প্রবাস
  14. বিনোদন
  15. বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন

রাশিয়ার বেতনের ফাঁদে যুবকরা; ক্লিনার থেকে কমান্ডো, বাংলাদেশি শ্রমিকরা এখন সৈনিক

প্রতিবেদক
অনলাইন ডেস্ক
ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২৫ ৬:২২ অপরাহ্ণ

 

আকিবুজ্জামিন (একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন) :

ক্লিনার থেকে সৈনিক! একসময় শ্রমিক, এখন রুশ সেনার কমব্যাট বাংলাদেশি যুবকরা। জীবন বদলাতে গিয়ে রাশিয়ার যুদ্ধের ময়দানে! বাংলাদেশি যুবকদের শিকার হওয়ার গল্প।

ভাবুন তো, (০৮-১০) লক্ষ টাকা খরচ করে জাচ্ছেন উচ্চবেতনে চাকুরীর আশায়, যে যদি শোনেন যুদ্ধ করা লাগবে – একবারে শ্রমিক থেকে সৈনিক। সম্প্রতি এমন ঘটনা চোখে পড়ছে প্রতিনিয়ত। রাশিয়া যাওয়ার পর বাধ্য করা হয় রণক্ষেত্রে যাওয়ার জন্য। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত হতে বিভিন্ন ফ্যক্টরি, জাহাজ নির্মাণ, ক্লিনার,বিল্ডিং নির্মাণ শ্রমিক ইত্যাদি কাজের প্রলোভন ও উচ্চ বেতন এর প্রতিশ্র্রুতি তে রাশিয়া পাঠানো হচ্ছে যুবকদের। শারীরিক শক্তিশালী তরুণ যুবকরা বেশি শিকার হচ্ছেন ।

ঘটনা : ১

সাইপ্রাসে যাওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ছেড়েছিলেন ঘর। তবে মানব পাচারকারীদের হাতে পড়ে তিনি বর্তমানে ইউক্রেনে। রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধ করছেন কিয়েভ বাহিনীর বিরুদ্ধে। পাচারের শিকার হয়ে তাকে এ পরিণতি ভোগ করতে হচ্ছে। ঘটনাটি ঘটেছে যশোর সদর উপজেলার চাঁচড়া ইউনিয়নের সরদারপাড়ার জাফর হোসেনের সঙ্গে।

সম্প্রতি মোবাইল ফোনে পরিবারকে পাচার ও তার বর্তমান অবস্থার কথা জানিয়েছেন জাফর। যুদ্ধের ময়দানে মৃত্যুর আতঙ্কে তিনি এখন বাড়ি ফেরার আকুতি জানিয়েছেন। জাফর ওই এলাকার খায়রুল সরদারের ছেলে। তিনি দুই সন্তানের জনক। জাফরের এই পরিণতিতে দুশ্চিন্তায় ভেঙে পড়েছেন তার পরিবারের সদস্যরা।

জাফরের বাবা খায়রুল সরদার জানান, পাঁচ মাস আগে ঢাকার একটি এজেন্সির মাধ্যমে সাইপ্রাসে যাওয়ার উদ্দেশে বাড়ি ছাড়েন জাফর। এ জন্য ওই এজেন্সিকে দিতে হয় ৯ লাখ টাকা। দালালচক্র জাফরেকে প্রথমে সৌদি আরবে নিয়ে যায়। সেখানে দুই মাস রেখে নিয়ে যায় দুবাই। তারপর তাকে বিক্রি করে দেয়।

বর্তমানে রাশিয়ায় রয়েছে জাফর। সেখানে যাওয়ার পর তাকে বলা হয়, আর্মিদের কাপড় পরিস্কার করতে হবে। কিন্তু তাদের নিয়ে যুদ্ধের প্রশিক্ষণ দিয়ে যুদ্ধের ময়দানে পাঠানো হয়েছে।

খায়রুল সরদার বলেন, ‘জাফর কান্নাকাটি করছে। সে জানিয়েছে, যুদ্ধ করতে গিয়ে একজন বাংলাদেশি মারা গেছে। আহতও হয়েছে একজন। জাফর দেশে ফিরতে চাইছে। না হলে তার মৃত্যু হবে বলে জানিয়েছে।’

এদিকে স্বামীর চিন্তায় শুধু কাঁদছেন জাফরের স্ত্রী খাদিজা খাতুন। তিনি বলেন, ‘আমার স্বামী অনেক কষ্টে আছে। আমি তাকে ফিরে পেতে চাই। কয়েকদিন আগে আমার সঙ্গে কথা হয়েছে। সে বলেছে, আমার সন্তানদের তুমি দেখে রেখ।’

পাচারের শিকার জাফরের মা-বাবা জানান, মামাতো ভাই মাহাবুবুর রহমানের মাধ্যমে ঢাকার এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ হয় তাদের। তবে বিষয়টি অস্বীকার করেছেন মাহবুবুর রহমান। তিনি বলেন, ‘ঢাকার হাজি ক্যাম্প এলাকার তামান্না নামে এক মহিলার সঙ্গে যোগাযোগ করে বনানীর ৪ নাম্বার রোডের হাসান এজেন্সির মাধ্যমে বিদেশে গেছে জাফর।’

মাহাবুবুর বলেন, ‘এজেন্সিতে জাফরের পাসপোর্ট প্রথমে জমা দেওয়া হয় সাইপ্রাসে যাওয়ার জন্য। সাইপ্রাসের ভিসা না হওয়ায় দুই বছর পর বলে, রাশিয়ায় লোক যাচ্ছে, সেখানে পাঠাবে। আমরা বলি, রাশিয়া যুদ্ধের দেশ ওই জায়গায় তো নিরাপদ নেই। তারা (এজেন্সি) বলে, নিরাপদ আছে ওই জায়গায় ক্লিনারের কাজ করবে। যুদ্ধের কাহিনী ওরা দেখতে পারবে না, জানবেও না। এভাবে নিয়ে যাওয়ার পর এখন বিপদে পড়েছে। তারা এখন অস্ত্র হাতে ট্রেনিং দিয়েছে। জাফর মাটির নিচে বাংকারে আছে। এখন সে জীবিত আছে নাকি মৃত কোনো খোঁজখবর পাচ্ছি না।’

জাফরকে ফিরিয়ে আনতে তার পরিবারের পক্ষ থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মাহবুবর রহমান।

ঘটনা : ০২

একমাত্র সন্তানের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়তে বাবা হুমায়ুন কবির রাশিয়ায় চড়া বেতনে চাকরি করার জন্য তিন মাস আগে বাড়ি ছাড়েন।

সঙ্গে যান তাঁর ভগ্নিপতি রহমত আলী। দালালের মাধ্যমে সৌদি আরব হয়ে রাশিয়ায় পৌঁছেও যান। কিন্তু এরপরই তাঁরা ভয়ংকর পরিস্থিতিতে পড়েন। তাঁদের রুশ সেনাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

অনিচ্ছা সত্ত্বেও পাঠানো হয় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ময়দানে। প্রশিক্ষণ শেষে যুদ্ধের ময়দানে প্রতিপক্ষের ড্রোন হামলায় গত ২৩ জানুয়ারি হুমায়ুন কবিরের মৃত্যু হয়। রহমত আলীরও ডাক পড়েছে যুদ্ধক্ষেত্রে। তিনিও মৃত্যুঝুঁকিতে ভুগছেন।

হুমায়ুন কবির (২৮) নাটোরের সিংড়া উপজেলার চৌগ্রাম ইউনিয়নের হুলহুলিয়া গ্রামের মৃত মহসিন আলীর ছেলে এবং রহমত আলী (৩০) নওগাঁর আত্রাই উপজেলার নন্দিগ্রামের পিয়ার আলী মণ্ডলের ছেলে।

পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, মৃত্যুর ১৩ দিন পার হলেও হুমায়ুন কবিরের লাশের সন্ধান মেলেনি। বাঁচার আকুতি জানিয়েও দেশে ফিরতে পারছেন না রহমত আলী। বাংলাদেশ সরকারের যথাযথ পদক্ষেপের আশা করছেন স্বজনেরা।

হুমায়ুন কবিরের স্ত্রী তারা খাতুন জানান, ড্রিম হোম ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম কোম্পানির মাধ্যমে ১৯ লাখ টাকার বিনিময়ে রাশিয়ায় পরিচ্ছন্নতাকর্মীর চাকরি করার জন্য বাড়ি ছাড়েন তাঁর স্বামী ও ননদের স্বামী।

গত বছরের অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে তাঁদের প্রথমে সৌদি আরবে নেওয়া হয়। সেখানে দুই মাস লুকিয়ে রাখার পর পাঠানো হয় রাশিয়ায়। সেখানে পৌঁছানোর পর তাঁদের পরিচ্ছন্নতার কাজে নিয়োগ না করে রুশ সেনাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

তাঁরা তাঁদের ২১ দিন যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিতে বাধ্য করেন। গত ২৩ জানুয়ারি হুমায়ুন প্রতিপক্ষের ড্রোন হামলায় যুদ্ধক্ষেত্রে মারা যান। রহমত আলী কোনোমতে পালিয়ে জীবন রক্ষা করেন। তাঁকে প্রশিক্ষণকেন্দ্রে আটকে রাখা হয়েছে।

তারা খাতুন প্রথম আলোকে বলেন, ২০ জানুয়ারি স্বামীর সঙ্গে সর্বশেষ কথা হয়। তখন কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেছেন, “আমরা তো যুদ্ধ করতে আসিনি। কিন্তু দালালেরা আমাদের সেনাবাহিনীর কাছে বিক্রি করে দিয়েছে।

আমরা হয়তো বাঁচতে পারব না।” তারা খাতুন বলেন, ‘মাত্র তিন বছর হলো বিয়ে হয়েছে। একমাত্র মেয়েটাও ছোট। মেয়ের খরচের কথা চিন্তা করে জমি বন্ধক রেখে ও ধারদেনা করে দালালকে টাকা দিছিলাম। সব হারালাম। এখন অন্তত ওর লাশটা চাই।

রহমত আলীর স্ত্রী যমুনা বেগম বলেন, সর্বশেষ গত পরশু (২ ফেব্রুয়ারি) রাতে স্বামীর সঙ্গে তাঁর ফোনে কথা হয়েছে। তিনি নিজেও হুমায়ুনের লাশ দেখতে পাননি। ওই ঘটনার পর তিনি দেশে ফিরে আসতে সেনা কর্মকর্তাদের পায়ে ধরেছেন। কিন্তু তারা তাঁকে ছাড়েননি। আজ মঙ্গলবার তাঁকে আবার যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠানোর কথা। কিন্তু গতকাল সোমবার থেকে তাঁকে ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না। তিনিও একমাত্র সন্তান নাদিয়াকে (৩) নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।

হুমায়ুনের মা করিমন বেওয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার জানের টুকরা দুটারে হারাইছি। শুনছি একজন মারা গেছে। অন্যজন মারা যাওয়ার পথে। আমি এখন শুধু ছেলের লাশ আর জীবিত জামাইকে ফেরত চাই। আর যাদের কারণে আজ এই অবস্থা হয়েছে, তাদের উপযুক্ত শাস্তি চাই।’

সর্বশেষ - এক্সক্লুসিভ

আপনার জন্য নির্বাচিত

দেবহাটায় শারদীয় দূর্গা পূজা উদযাপনের প্রস্তুতি ও আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা

দেবহাটার সখিপুর বাজারে গত ১ মাসে ১০ টির বেশি সাইকেল চুরি 

লাঞ্চিত করার প্রতিবাদে ইউ‘পি চেয়ারম্যানের সংবাদ সম্মেলন

বেনাপোলে বিদেশি মদসহ চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী বারিক গ্রেফতার

ভারতে ধর্ষণের শিকার বাংলাদেশী মেডিকেল ছাত্রী; হাইকোর্টে বিচার প্রার্থনা

পাবনায় ইয়াবাসহ দুইজন মাদক ব্যাবসায়ী আটক

এসিল্যান্ড পরিচয়ে মোবাইলে চাঁদাবাজির মূল হোতাদের খুঁজতে মাঠে নেমেছেন প্রশাসন

জিপি’র নেটওয়ার্ক বিপর্যয়ে ট্রেন দূর্ঘটনা

মেহেরপুরে ১০ বছরের শিশুকে ধর্ষণ 

পাবনায় সাংবাদিকদের সাথে নবাগত পুলিশ সুপারের মতবিনিময়