![](https://bd-sokal.com/wp-content/plugins/print-bangla-news/assest/img/print-news.png)
ডেস্ক নিউজ : বান্দরবানের লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নের টংগঝিরিতে অগ্নিকাণ্ড নাশকতার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩ খ্রিস্টান যুবকসহ ৪ জন। এদের মধ্যে তিনজন ত্রিপুরা এবং একজন বাঙালি সম্প্রদায়ের। গ্রেপ্তারকৃতরা পুলিশের নিকট ঘর পোড়ানো ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে বলে বান্দরবান জেলার পুলিশ সুপার মো. শহিদুল্লাহ কাওসার জানিয়েছেন। তবে খ্রিস্টানদের বড় দিনে নাশকতার ঘটনা ঘটানোর পিছনে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক কোন ষড়যন্ত্র আছে কিনা পুলিশ তা ক্ষতিয়ে দেখছে।
মুলত টংগঝিরি নয়া পাড়াতে পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজির আহমদের শত একর জায়গা জবর দখল করে নেওয়ার জন্য নতুন বসতি স্থাপনকারী সকল ত্রিপুরাই খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের। নতুন করে জবর দখল করে বসতি স্থাপনকারী বিবাদমান ২টি পক্ষই ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের লোক। কিছুদিন পূর্বে লামা থানায় খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের গুঙ্গামনি ত্রিপুরা যে ৫ জনের নাম উল্লেখ করে লামা থানায় চাঁদাবাজির অভিযোগ এনেছিলেন অভিযুক্ত সকলেই খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের।
বৃহস্পতিবার সকালে বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন ও পুলিশ সুপার মো. শহিদুল্লাহ কাওছার অগ্নিকান্ডের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এ ঘটনায় গ্রেপ্তরকৃতরা হলো খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের- স্টিফেন ত্রিপুরা (৫০), মসৈনিয়া ত্রিপুরা (৪৪), যোয়াকিম ত্রিপুরা (৫২) ও বেনজীরের বাগানের কর্মচারী ইব্রাহীম (৬৫)। এই গ্রেপ্তরকৃত ৪ জনের বাড়ি সরই ইউনিয়নে।
জানা গেছে আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর বেনজীরের কর্মচারীগণ আত্মগোপনে চলে যায়। এটাকে সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করে টংগঝিরি পাড়ার সুযোগ সন্ধানী ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের লোকজন বেনজীরের জায়গায় নতুন করে বসতি স্থাপন শুরু করে।
সরই ইউপি চেয়ারম্যান মো. ইদ্রিস কোম্পানী জানান, টংগঝিরি নয়া পাড়া নাম দিয়ে বেনজীরের জায়গায় ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর লোকজন যারা ধর্মীয়ভাবে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের তারা নতুন করে জুমঘর নির্মাণ কার্যক্রম শুরু করে। টংগঝিরি এই নতুন পাড়ার বসতির বয়স ২ থেকে ৩ মাস। নতুন বসতি স্থাপনকারীদের মধ্যে বেনজীরের জায়গার ভাগাভাগি নিয়ে মতবিরোধ দেখা দিলে ২টি পক্ষের সৃষ্টি হয়।
টংগঝিরি পূর্ব বেতছড়া পাড়ার গুঙ্গামনি ত্রিপুরা লামা থানায় কিছুদিন পূর্বে অভিযোগ করে জানিয়েছিলেন, ছবিচন্দ্র পাড়ার স্টিফেন ত্রিপুরা, টংগঝিরি পাড়ার মসৈনিয়া, ছবিচন্দ্র পাড়ার যোয়াকিম ত্রিপুরা ও কলাঝিরি পাড়ার সুরেন্দ্র ত্রিপুরা নতুন পাড়াবাসির কাছে পাঁচ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেছে। তবে এটা মূলত প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার একটি প্রচেষ্টা ছিল বলে অন্য পক্ষের অভিযোগ।
অভিযোগে গুঙ্গামনি ত্রিপুরা আরো জানান, অভিযুক্ত এই সকল লোকের কাছে অস্ত্র রয়েছে। তার ভাষায়, এরা চাঁদাবাজ ও পাহাড়ী সন্ত্রাসী গ্রুপ তৈরি করে দীর্ঘদিন যাবৎ উল্লিখিত ঘটনাস্থলে পাড়ায় আসিয়া পাড়ার বাসিন্দাদের অস্ত্রের ভয়-ভীতি দেখাইয়া চাঁদা দাবি করে আসিতেছে। তাদের নিকট দেশীয় তৈরি বন্দুক, ধারালো দা, লম্বা কিরিছ সহ মারাত্মক অস্ত্র-শস্ত্র রয়েছে।
অভিযোগে গুঙ্গামনি আরো জানান, অভিযুক্ত ব্যক্তিগণ চাঁদা প্রদানে ব্যর্থ হলে পাড়ায় অগ্নিকান্ডের মাধ্যমে পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি প্রদান করেছেন।
জেলা পুলিশ সুপার আরো জানিয়েছেন, গ্রেপ্তারকৃত আসামী সহ অন্যান্য আসামীগণ পাড়াবাসির নিকট কিছুদিন পূর্বে পাঁচ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেছিলো। বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন জানিয়েছেন, বেতছড়া টংগ ঝিরি নয়া পাড়ার বাসিন্দাদের মধ্যে পূর্ব হতে মত বিরোধ চলে আসছিলো। আগুনে পুড়ে যাওয়া ১৬টি পরিবারের নিজ নিজ পুরাতন পাড়ায় তাদের নিজস্ব বসতবাড়ি রয়েছে।