বাংলাদেশ সকাল
শনিবার , ৪ জানুয়ারি ২০২৫ | ২২শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. আবহাওয়া
  5. এক্সক্লুসিভ
  6. কৃষি বার্তা
  7. ক্যাম্পাস
  8. খেলাধুলা
  9. খোলা কলাম
  10. জাতীয়
  11. ধর্ম ও জীবন বিধান
  12. নির্বাচন
  13. প্রবাস
  14. বিনোদন
  15. বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন

নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ, হৃদয়ে রক্তক্ষরণ 

প্রতিবেদক
অনলাইন ডেস্ক
জানুয়ারি ৪, ২০২৫ ২:০৫ অপরাহ্ণ

 

বৃটিশের শোষণ থেকে মুক্তির পর ১৯৪৭ সালের ১৪ই আগষ্ট দ্বি-জাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে পূর্ব পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রের জন্ম হয়। সেই আন্দোলনের নেতৃত্বে পাকিস্তানীদের প্রভাব বেশি থাকায় পশ্চিম পাকিস্তানে বসে তারা আমাদের শাসন করতো।পশ্চিমাদের সব সময় চিন্তায় ছিল কিভাবে আমাদের শাসন, শোষনও দাবিয়ে রাখা যায়। তাদের এই দুরভিসন্ধিমূলক আচরণ বাংলার ছাত্র জনতা বুঝতে অসুবিধে হয় নাই। তাই জাতীর অগ্রসর চিন্তার পথিকৃৎ হিসেবে ১৯৪৮ সালের ৪ঠা জানুয়ারি পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র লীগের জন্ম হয়। আহবায়ক ছিলেন নাঈম উদ্দিন আহমেদ। কেন্দ্রীয় নেতা ছিলেন, দবিরুল ইসলাম,খলেক নেওয়াজ খান, অলি আহাদ, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন প্রমুখ নেতৃবৃন্দ। প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। শিক্ষা, শান্তি, প্রগতি ছিল মূল নীতি। সাদা জমিনের পতাকার চিহ্নিত নিচের প্রান্তে তিনটি লাল অগ্নিশিখাকে আন্দোলন ও সংগ্রামের স্বারক হিসেবে ধরে নিয়ে অগ্নি শিখার উপরের তিনটি সবুজ তারকা দিয়ে মূলনীতি শিক্ষা,শান্তি ,প্রগতির প্রতি আনুগত্য জানানো হয়েছে ।

পাকিস্তানের জন্মের সাথে এই সংগঠনের জন্ম ও আন্দোলন সংগ্রামের মধ্যে দিয়েই গড়ে উঠা। পশ্চিম পাকিস্তানীরা উর্দুকে রাষ্ট্র ভাষা করে আমাদেরকে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক বানাতে ছেয়েছিল। ১৯৪৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জনহলের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যখন কায়েদে আযম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা দিলে ছাত্র সমাজ সাথে সাথে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। তারই পথ ধরে ১৯৫২ সালের ভাষার জন্য শহীদ হন রফিক, জব্বার, সালাম, বরকত। এই আন্দোলনের মাধ্যমে ছাত্রলীগের জাতীয়তাবাদী সংগ্রামী চেতনার ধারা বিকশিত হয়। ছাত্রলীগ ভাষা আন্দোলনের পথধরে ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে বংগবন্ধু শেখ মুজিবের সাথে ভ্যান গার্ডের ভূমিকা পালন করে। মুসলিম লীগের ভরাডুবির মাধ্যমে বিপুল সংখ্যাক আসন নিয়ে যুক্তফ্রন্টকে বিজয়ী করেছিল। এরপর শুরু হয় ১৯৬২ সালের কুখ্যাত হামুদুর রহমানের শিক্ষা কমিশন রিপোর্টে বিরুদ্ধে আন্দোলন। “৬৬ সালে “ছয় দফা “প্রনয়ণ করা হয়। আওয়ামী লীগের জাতীয় দাবি ছয়দফাকে জনগণের দ্বার গড়ায় পৌঁছে দিয়ে বাংলার আপামর জনগণকে সংগঠিত করার মূল দায়িত্ব ছাত্রলীগের কর্মী বাহিনী ছিল । সেই একই সময়ে ছাত্রদের ন্যায্য দাবি দাওয়া নিয়ে “এগারো দফা ” ঘোষণা করা হয়। এই দাবি দাওয়ার ভিত্তিতে জনগণ ও ছাত্র সমাজকে ব্যাপকভাবে সংগঠিত করে ছাত্রলীগ। যার ফলশ্রুতিতে ৬৯ সালের গন অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু মুজিবকে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আসামি হিসেবে জেল থেকে মুক্ত করা হয়। লৌহ মানব আয়ুব খানের মার্শাল’ল আর তার গদি তছনছ হয়ে যায়। পরদিন পল্টন ময়দানে লক্ষ লক্ষ মানুষের মাঝে ছাত্র সমাজের পক্ষথেকে ছাত্রনেতা তোফায়েল আহমেদ, শেখ মুজিব কে বঙ্গবন্ধু উপাধি দেন। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে সারা দেশে ছাত্র লীগের একক প্রচেষ্টায় আওয়ামী লীগকে পাকিস্তানের একক সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট পেয়ে নির্বাচিত করে। কিন্তু টিক্কা খান ইয়াহিয়া খান, জুলফিকার আলি ভুট্রু ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত করে গনতন্ত্রের প্রতি বৃদ্ধাংগুলি দেখিয়ে শান্তি পূর্ণ ভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করে নাই। উপরোন্ত ঘুমন্ত বাঙালীর বুকে অস্ত্র চালিয়ে গনহত্যার পথ বেছে নেয় ।

১৯৬২ সাল থেকে ই ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ বুঝতে পেরে ছিলেন পশ্চিমাদের সাথে একসাথে থাকা যাবে না। শুধু ধর্মীয় মিল ছাড়া তাদের সাথে আমাদের কোন মিল নেই। ভাষা, সংস্কৃতিক, ভৌগোলিক সীমারেখা সকল দিক থেকে আমাদের চাইতে তারা আলাদা। একই দেশ থাকা সত্ত্বেও পশ্চিম পাকিস্তানের সাথে আমাদের দেশের জিনিসপত্রের দাম ,সহ ছাত্রদের কাগজ কলম ইত্যাদির মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যদির দামের ক্ষেত্রে ছিল বৈষম্য। বাংলার উৎপাদিত চা,পাট, তুলা সহ তাত ও কৃষিজাত দ্রব্য রফতানি করে,পশ্চিম পাকিস্তানে বড়ো বড়ো কল কারখানা ইন্ডাস্ট্রি গড়ে তোলা হয়। গড়ে তোলা হয় স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়। এবং ব্যাপক অবকাঠামো উন্নয়ন করা হয়। তাই পাকিস্তানীদের শাসন ও শোষনের একমাত্র মুক্তির পথ ছিল স্বাধীনতা। সেই চিন্তা ধারা থেকেই তৎকালীন ছাত্র লীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল আলম খান, আব্দুর রাজ্জাক, কাজী আরেফ আহমদ সহ ছাত্র নেতারা স্বাধীনতার নিউক্লিয়াস গঠন করেন। অঘোষিত এই নিউক্লিয়াসের নেতৃত্বেই বিভিন্ন দাবি দাওয়ার আন্দোলনকে আপোষহীন জংগী ধারায় রুপদিয়ে স্বাধীনতার দিকে অগ্রসর করেন। কালজয়ী শ্লোগান জয় বাংলা ছিল ছাত্রলীগের সৃষ্টি । ২রা মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনে তৎকালীন ডাকসুর ভি.পি ছাত্রনেতা আ.স.ম আব্দুর রব, হাজার হাজার ছাত্রদের স্লোগান আর করতালির মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রথম পতাকা উত্তোলন করেন। এবং ৩রা মার্চ পল্টনের জনসভায় স্বাধীন বাংলার ইশতেহার পাঠ করেন ছাত্র লীগের সাধারণ সম্পাদক শাজাহান সিরাজ এবং বঙ্গবন্ধু সে দিন জয়বাংলা বাহিনীর একটি চৌকুশ দলের মার্চপাষ্টের সালাম গ্রহন করেন। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক সাতই মার্চের দিক নির্দেশনা মূলক ভাষনের রুপকার ছিলেন ছাত্রলীগের নিউক্লিয়াসের নেতৃবৃন্দ । ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ জানতেন, পশ্চিমারা সহজে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেনা। যুদ্ধ অনিবার্য। ঠিক তাই হয়েছিলো। ২৫শে মার্চ কালো রাত্রিতে পশ্চিম পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ঘুমন্ত বাঙালীকে গনহত্যা শুরু করে। এই গনহত্যার বিরুদ্ধে নিরস্ত্র বাঙালীর অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করার কোন বিকল্প ছিল না। বঙ্গবন্ধুর ইশারায় আগ থেকেই পার্শ্ববর্তী দেশের সাথে আমাদের সহায়তার জন্য যোগাযোগ ছিল। সেই অনুযায়ী প্রায় এক কোটি বাঙালী শরনার্থীর হয়ে ভারতে আশ্রয় নেয়। তারপর শুরু হয় মুক্তিযোদ্ধ। মুক্তি বাহিনী, মিত্রবাহিনী, পাশাপাশি সারা দেশের ছাত্র সমাজ নিয়ে গঠিত হয় মুজিব বাহিনী। জেনারেল ওবান সিং এর প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ছাত্রলীগের কর্মী বাহিনী যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করে।

স্বাধীনতার আগ থেকে ই ছাত্রলীগের মাঝে দুটি মতের ধারা ছিল। ছাত্রলীগের তাত্ত্বিক নেতা সিরাজুল আলম খানের গ্রুপের নেতৃবৃন্দ মনে করতেন দেশ স্বাধীন হলে সমাজতান্ত্রিক বাংলাদেশ গঠন হবে। আর শেখ মনি’র নেতৃত্ব মনে করতেন গতানুগতিক পুঁজিবাদী সমাজের বাংলাদেশ ই থাকবে। ছাত্রলীগের পুরো নেতৃত্ব ছিল দুই ভাগে বিভক্ত। ১৯৭২ সালে ছাত্রলীগের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে আনুষ্ঠানিক ভাবে দ্বিধা-বিভক্ত হয়ে যায়। বঙ্গবন্ধুর ভাগিনা শেখ মনি’র মুজিববাদীদের সম্মেলনে যোগ দেন। একই বছর সিরাজুল আলম খানের নেতৃত্ব ১৯৭২ সালের ৩১শে অক্টোবর জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের সৃষ্টি হয়।

নব্য স্বাধীন বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর পাহাড় জনপ্রিয়তাকে চ্যালেঞ্জ করেন একঝাঁক মেধাবী তরুণ। ছাত্রলীগের নেতাকর্মী বাহিনী নিয়ে শুরু হয়ে সমাজ পরিবর্তনের শ্লোগান নিয়ে আরেক সংগ্রাম আন্দোলন। স্বাধীনতার পর মুজিববাদী ছাত্রলীগ এবং বৈজ্ঞানিক সমাজতান্ত্রিক ছাত্রলীগ নামে দ্বিধা বিভক্তর পর ছাত্রলীগ বহুধা বিভক্ত হয়েছে। বৈজ্ঞানিক সমাজতান্ত্রিক পন্থীরা বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত হয়ে এই ধারা প্রায় বিলুপ্ত।

এদিকে মুজিববাদী ছাত্রলীগ তার গন সংগঠন আওয়ামী লীগ বিভিন্ন সময়ে ক্ষমতায় থাকার কারনে শক্তিশালী অবস্থান ধরে রাখে। কিন্তু এই অবস্থান টা যতটা না আদর্শিক ছিল তারচেয়ে বেশী ছিল সুবিধা ভোগী ছাত্র নেতৃত্ব। যে ছাত্রলীগের ইতিহাস হলো বাংলাদেশ সৃষ্টির ইতিহাস, ছাত্রসমাজ ও জনগণের ভালোবাসা ও ত্যাগের ইতিহাস। বিগত ৭৭ বছরে এদেশে হাজার হাজার ত্যাগী নেতা কর্মী সৃষ্টি করেছে। যারা জাতীয় আন্তর্জাতিক ফোরামে তাদের প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে ও বহুধা বিভক্ত ছাত্রলীগ যার যার অবস্থান থেকে গনতন্ত্র, শিক্ষা ও ভাত কাপড়ের লড়াইয়ে যথেষ্ট ভূমিকা পালন করেছে। ৯০’গন অভ্যুত্থান ,ও স্বৈরাচার সামরিক শাসক এরশাদ বিরোধী আন্দোলন প্রমান। কিন্তু ৯০ গন অভ্যুত্থানের পর মূলত দেশের কোন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচন নেই। সুস্থ ছাত্র রাজনৈতিক চর্চা নেই। যারাই সরকার গঠন করেছেন সু কৌশলে বিরাজনীতি করনের দিকেই কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের নিয়ে গেছেন। শিক্ষার পাশাপাশি খেলাধূলা, সাংস্কৃতিক চর্চা সহ একজন শিক্ষার্থীর সর্বোচ্চ মেধার বিকাশের কোন ব্যবস্থা নেই। বিগত ৩৫ বছর ধরে দেশে কোন ছাত্র রাজনীতি ছিল না । ছিল না কোন ছাত্র সংসদ নির্বাচন। ফলে দেশপ্রেমে উদ্ভুত হয়ে জাতির সামনে কোন নেতৃত্ব বের হয়ে আসেনি। ছাত্রদের বিভিন্ন ইস্যু ভিত্তিতে আন্দোলন করতে চাইলে সরকারি ছাত্র সংগঠনের কতৃক নির্যাতনের স্টিম রোলার চালানো হয়েছে। যে রাজনৈতিক দলই ক্ষমতায় গেছেন তার সমর্থিত ছাত্র সংগঠনের দ্বারা অন্যান্য ছাত্র সংগঠনকে ক্যাম্পাস থেকে বের করে নিজ নিজ ক্যাম্পাসে অভয় রাজ্যে পরিনত করেছেন। সংগঠনের মধ্যে আদর্শিক চর্চা না থাকার কারনে তারা বেপরোয়া হয়ে চাঁদাবাজি, হলের সিট বানিজ্য, টেন্ডারবাজী, হত্যা, ধর্ষন, মাদক চোরাচালান সহ সমাজের এমন কোন অপকর্ম নেই যে ছাত্র নামধারী এই নেতারা যুক্ত ছিলেন না। আরও ভয়ংকর তথ্য উপজেলা, জেলা, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত পদ বানিজ্য অর্থাৎ টাকার বিনিময়ে পদ বিক্রি হতো । বিশেষ করে গত ষোল বছরের আওয়ামী লীগের শাসন আমলে বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া ঐতিহ্যবাহী ছাত্রলীগ এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিলো যা বিভিন্ন মিডিয়ার খবরে গা শিহরিত হয়েছে। যেমন ২০১০ সালে পহেলা ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মহসিন হলের ছাত্র আবু বকরকে সিট দখলকে কেন্দ্র করে নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়। ২০১২ সালের ৮ জানুয়ারি জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগের ছাত্র জুবায়ের, মমতাজ হোসেন, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র এস.এম.আলী ইমাম, বুয়েটের মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ, খুলনা কুয়েট শিক্ষার্থী জাহিদুর রহমান সহ অনেককে নৃশংস ভাবে হত্যা করা হয় । জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন দেশের আইনের প্রতি বৃদ্ধাংগুলি দেখিয়ে ধর্ষণের সেঞ্চুরি পালনের ঘোষণা দেন। এইসব ঘটনায় ২০১৮ সালে একটা দৈনিক ইংরেজি পত্রিকায় ছাত্রলীগকে “লজ্জার ব্রান্ড” হিসাবে অবহিত করেন। ২০২০ সাল ২৪ শে সেপ্টেম্বর শতবর্ষের পুরোনা ঐতিহ্যবাহী সিলেট সরকারি এমসি কলেজের প্রকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে নববিবাহিতা স্ত্রী নিয়ে গাড়িয়ে যাচ্ছিলেন। হটাৎ গাড়ির গতি রোদ করে জোর করে ছাত্রাবাসে নিয়ে ধর্ষন করা হয়। এক নবপরিনীতা স্ত্রী স্বামীর চোখের সামনে সম্ভ্রম হারালেন। ১১ জন ছাত্রলীগের ধর্ষকের নামে মামলা হলো কিন্তু কিছু ই হলো না। এরকম লোমহর্ষক শত শত ঘটনার বিচারের দাবী বিবৃতে কাঁদছে।

সম্প্রতি অর্ন্তবর্তী কালীন সরকারের প্রেস সচিব ছাত্রলীগ কর্তৃক এই ধরনের হত্যাকান্ডের ৮৬ জনের নাম প্রকাশ করেছেন।তাদের হিসাব মতে সারা দেশে বিগত সরকারের আমলে ছাত্রলীগের হাতে ধর্ষিত ও নির্যাতিত হয়েছেন এক হাজার বত্রিশ জন। সর্বশেষ ২০২৪ সালে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমিয়ে আওয়ামী লীগ কে ক্ষমতায় রাখতে র‍্যাব, পুলিশের সাথে মিলে ছাত্র জনতার উপর আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে লাঠিয়াল বাহিনী হিসাবে কাজ করেছে ছাত্রলীগ। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের মতে, স্বৈরাচার বিরোধী গন অভ্যুত্থানে ছাত্রলীগ, পুলিশ, র‍্যাবের হাতে নিহতের সংখ্যা ১৪২৩ জন। ২২ হাজারের বেশি আহত, অঙগহানি, গুলিতে চোখ, হাত, পা হারিয়েছেন ১৩২৬ হন। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে এইসব ঘটনার দায় ছাত্রলীগ এড়াতে পারে না। এবং বিগত দিনে রাষ্টীয় পৃষ্টপোষকায় বেপরোয়া সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে গড়ে উঠেছে। তাই ২০২৪ সালের ২৩ অক্টোবর ঐতিহ্যবাহী ছাত্রলীগের নামে সন্ত্রাসী কালীমা নিয়ে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে দেশে সমস্ত কার্যক্রম বাতিল করা হয়।

আমার মনে হয়  সরকারের এই সিদ্ধান্তটা হয়ে গেলো মাথাব্যথার জন্য মাথা কেটে ফেলার মতো। কারন ছাত্রলীগ একটি ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানের ভূমিকার কারনে পাকিস্তানী শাসক ও শোষনের হাত থেকে মুক্তি পেয়ে ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বিশ্বের বুকে লাল সবুজের দেশ ও পতাকা পেয়েছি। এই সংগঠন নি:স্বার্থ নিবেদিত হাজার হাজার নেতা কর্মী সৃষ্টি করেছে। যাদের অবদান জাতি গঠনের ক্ষেত্রে কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। এই সংগঠনের নামের সাথে হাজার হাজার মানুষের ভালোবাসা আবেগ জড়িত। আমাদের মতো স্বল্প উন্নত দেশে ছাত্ররাই জাতির বিবেক হিসেবে কাজ করে। স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে ভবিষ্যতের ত্যাগী নেতা কর্মী রাষ্ট্রনায়ক সৃষ্টি হয়। আর সেই কাজটাই চিরদিন ছাত্রলীগ নামক এই প্রতিষ্ঠান আদর্শিক চর্চার মাধ্যমেই নিরলসভাবে করেছে। ছাত্রলীগ সবসময় নির্যাতিত ছাত্র জনতার বন্ধু হিসেবে কাজ করেছে। গনতন্ত্র, আইনের শাসন, শিক্ষার্থীদের দাবি দাওয়া, সকল ধরনের বৈষম্যর বিরুদ্ধে আজীবন সংগ্রাম আন্দোলন করেছে। কিন্তু এইবারে ভূল নেতৃত্বের কারনে তার ব্যাতিক্রম । এই প্রশ্নের গভীরে গেলে উত্তর পেয়ে যাবেন। ৯০ সালের গন অভ্যুত্থানের পর সুকৌশলে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের চক্রান্ত চলছিল। যাতে শিক্ষাঙ্গন থেকে রাজনৈতিক অঙ্গনে মেধাবী নের্তৃত্ব বেরিয়ে না আসে। ছাত্র সমাজের মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়ে মেধাহীন জ্বি হুজুর মার্কা নেতৃত্ব দিয়ে কতৃত্ববাদী স্বৈরতান্ত্রিক, ফ্যাসিবাদী শাসন এবং পরিবারতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা যায়। আজকে ছাত্রলীগকে যে দোষে বিচার করা হচ্ছে । যদি বিএনপি ক্ষমতায় থাকতো তাহলে ছাত্রদল ও একই কাজ করতো। বিগত বিএনপির ক্ষমতায় থাকার সময় একই ঘটনা ছিল হয়তো একটু কমবেশি। কারন আওয়ামী লীগ বেশিদিন ক্ষমতায় থাকার কারনে রাষ্টীয় পৃষ্টপোষকতায় অপরাধের মাত্রা বেশি হয়েছে। তাই এই সংগঠনকে নিষিদ্ধের পথে না গিয়ে রাজনৈতিক ভাবে সঠিক সমস্যার সমাধানের মূল উৎপাটন করা উচিৎ।

শাহাব উদ্দীন: লেখক কলামিস্ট ও রাজনৈতিক

সর্বশেষ - এক্সক্লুসিভ

আপনার জন্য নির্বাচিত

আমতলী পৌর নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দ

ফেসবুকে ঘুরে বেড়াচ্ছে এক যুবকের মার খেয়ে পড়ে থাকার ছবি, ঘটনা কী?

কলারোয়া শিক্ষা অফিসে প্রশিক্ষণের তথ্য নিতে গিয়ে সাংবাদিক লাঞ্চিত : বিএমএসএস’র নিন্দা ও প্রতিবাদ  

পাকিস্তান গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই প্রধান হলেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল মুহাম্মদ আসিম মালিক

ডিমলায় প্রাথমিক শিক্ষকদের মানববন্ধন ও স্মারক লিপি প্রদান

মেহেরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্প মাল্য অর্পন

যশোর জেলা ডিবির পৃথক অভিযানে মাদকদ্রব্য ফেনসিডিল, ইয়াবা ও গাজাসহ গ্রেফতার ২

রংপুর জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে গঙ্গাচড়ায় মানববন্ধন 

সমালোচিত ডাঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন বরখাস্ত 

দুস্থ ও অসহায়দের মাটিরাঙ্গা সেনা জোনের আর্থিক সহায়তা প্রদান