সাগর নোমানী রাজশাহী ব্যুরো :
রাজশাহী মহানগরীর মতিহার থানাধীন তালাইমারী এলাকায় এক দুঃসাহসিক ডাকাতি লুটপাট ও হামলার ঘটনা ঘটেছে। সন্ত্রাসী কায়দায় অস্ত্রধারীরা বাড়িতে ঢুকে লুটপাট, ভাঙচুর ও শারীরিক নির্যাতন চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়রা জানান, ডাকাতির চেষ্টাকালে স্থানীয়দের প্রতিরোধের মুখে দুইজন সন্দেহভাজনকে আটক করা হয়েছে।
গত শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে তালাইমারী কাঁচা বাজার সংলগ্ন একটি বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একদল লোক ওই বাড়িতে ঢুকে লুটপাটের চেষ্টা চালায়। স্থানীয়রা বিষয়টি বুঝতে পেরে চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসে এবং তাদের প্রতিরোধ করে। একপর্যায়ে মো. তাহামিদ ইসলাম (২৬) নামে একজনকে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তিনি নগরীর সাগর পাড়ার বাসিন্দা মো. তৌফিকুল ইসলামের ছেলে।
এ ঘটনায় আরও দুইজনের সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া গেছে, যাদের মধ্যে একজন উম্মে হানী শিলা, যিনি বিনোদপুরের আবু সাহাদাৎ সায়েমের স্ত্রী।
ভুক্তভোগী মো. এজাজুল হক (৬৯) থানায় দায়ের করা অভিযোগে উল্লেখ করেন, শুক্রবার ভোর ৫টার দিকে আলুপট্টি এলাকার মো. সালাউদ্দিন রাজুর হুকুমে কয়েকজন ব্যক্তি তাঁর বাড়িতে প্রবেশ করে। তারা নিজেদের নিরাপত্তা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে বাসার সবাইকে বাইরে আসতে বলে। এরপর সাগরপাড়া এলাকার তৌফিকুল ইসলামের ছেলে তাহামিদ ইসলাম ও বিনোদপুর বাজার এলাকার হাসান আলীর সন্তান মিলনসহ আরও কয়েকজন বাড়ির আসবাবপত্র ভাঙচুর করে এবং পরিবারের সদস্যদের শারীরিকভাবে আঘাত করে।
অভিযোগে আরও বলা হয়, তাহামিদ ইসলাম এজাজুল হকের চোখে ঘুষি মারেন এবং মিলন এলোপাতাড়ি আঘাত করেন। তাঁর ভাই এনামুল হক (৭০) ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন বোন মাসুদা খাতুন (৫৫)-এর ওপরও হামলা চালানো হয়।
এছাড়া অভিযুক্তরা পরিবারের তিনজন নারীর প্রতি অনভিপ্রেত আচরণ করার চেষ্টা করেন এবং তিন বছরের এক শিশুকে ভয় দেখানো হয়। অভিযোগ অনুযায়ী, তারা আলমারি ভেঙে ১৯ ভরি স্বর্ণ, ৯ লক্ষ টাকা, গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ও মোবাইল ফোন নিয়ে যায়।
স্থানীয়দের সহায়তায় সন্দেহভাজন তিনজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। আহত ভুক্তভোগী ও তাঁর ভাইকে চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এলাকাবাসীর সাহসিকতায় অপরাধীরা ধরা পড়ায় তাদের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন স্থানীয় জনগণ ও রাজনীতি নেতৃবৃন্দ।
এ বিষয়ে মতিহার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আব্দুল মালেক জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে এবং সংশ্লিষ্টদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। আটক দুইজনকে পুলিশ হেফাজতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসী অভিযুক্তদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।