মোঃ ফিরোজ আহমেদ পাইকগাছা॥ পাইকগাছা উপজেলার হরিঢালীর উলুডাঙ্গা, রহিমপুর, সোনাতনকাটি, হরিদাসকাটি (ইউ,আর,এইচ,এস) উচ্চ বিদ্যালয়ে জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০২১ অনুযায়ী চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারী নিয়োগে একাধিক প্রার্থীর কাছ থেকে অর্থ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এতে নৈশ প্রহরী পদে ৭ লাখ টাকা দিয়েও চাকরি না পেয়ে নিয়োগ বোর্ডের ১ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন মোঃ মোক্তার হোসেন নামে এক নিয়োগ প্রার্থী।
মামলা এজাহারে নিয়োগ বোর্ডের সদস্য সচিব ও প্রধান শিক্ষক উত্তম কুমার দাসের নাম উল্লেখ করে পাইকগাছা সিনিয়ার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন ।যার নং সি,আর-১২৬৯। আদালত মামলাটি পিবিআই খুলনা কে তদন্তের নির্দেশ দেন। চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারী নিয়োগ প্রক্রিয়ায় একাধিক প্রার্থীর কাছ থেকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উত্তম কুমার দাস অর্থের বিনিময়ে চাকরি দেয়ার প্রলোভনে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়।
তবে ওই বিদ্যালয়ের নিয়োগ কমিটির দাবি কোন প্রার্থীর কাছে আর্থিক কোনো লেনদেন করা হয়নি। বরং মেধার ভিত্তিতে শিক্ষক ও কর্মচারী মিলে সর্বমোট ৫টি পদে ৫ জনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত ইউ,আর,এইচ,এস উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক ও কর্মচারী মিলে সর্বমোট ৫টি পদ শুন্য হওয়ায় প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটি সদস্যদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সহকারি প্রধান শিক্ষক,নৈশ প্রহরি, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, নিরাপত্তা কর্মী ও আয়া পদের জন্য গত ১৩ জুলাই ২০২২ জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। ঘোষণা অনুযায়ী গত ৫ নভেম্বর ২০২২ তারিখে লিখিত এবং মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার জন্য ডাকযোগে এডমিট কার্ড পাঠানো হয়। এডমিট কার্ডে দিন ক্ষণ ও স্থান হিসাবে পাইকগাছা সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়োগ প্রার্থীদের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। নৈশ প্রহরি পদে আবেদনকারী মোঃ মোক্তার হোসেন বলেন, ইউ, আর, এইচ, এস উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন আমার বাসা। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর উক্ত পদে আমি প্রার্থী হিসেবে আবেদন করি এবং উক্ত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সাথে একান্ত ভাবে বৈঠক করি। আমাকে ওই পদে চাকরি প্রদান করা হবে মর্মে ৭ লক্ষ টাকা রফাদফা হয়।রফাদফা মোতাবেক স্কুলের প্রধান শিক্ষক কে ৩ কিস্তিতে নগদ ৭ লক্ষ টাকা দিয়েছি। কিন্তু নিয়োগ পাইনি।পরে জানতে পারি প্রধান শিক্ষকের যোগসাজে ১০লক্ষ টাকার বিনিময়ে নৈশ প্রহরি পদে স্বগোত্রীয় প্রশান্ত সরকার কে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাই চুক্তি মোতাবেক নৈশ প্রহরি পদে নিয়োগ না পেয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে টাকা ফেরৎ চাইলে তিনি তাৎক্ষণিক ভাবে ১লক্ষ টাকা প্রদান করেন ও বাকি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বিভিন্ন হুমকি ধামকি প্রদান করেন। এমতাবস্হায় আমি ও আমার পরিবার মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ি পরবর্তীতে মামলা দায়ের করেছি।টাকা লেনদেনের বিষয়ে প্রধান শিক্ষক ও আমার মধ্যকার মোবাইলে কথোপকথন সংরক্ষিত আছে।
এসময় মোক্তার হোসেন আরো জানান,নৈশ প্রহরি পদের অন্য দুই প্রার্থী মোঃ আরিফ হোসেন ও মোঃ আতাউর রহমান কে দিয়ে পরিচ্চন্নতা কর্মী পদে ফ্রক্সি দিয়ে ফরম পূরন করা হয়েছে। এ বিষয়ে নৈশ প্রহরি পদে আবেদন কারি অন্য দুই প্রার্থী মোঃ আরিফ হোসেন ও মোঃ আতাউর রহমান জানান,নির্ধারিত দিনে পরীক্ষা কেন্দ্র প্রধান শিক্ষক উত্তম কুমার দাস সুকৌশলে আমাদের কে দিয়ে পরিচ্ছন্নতা কর্মী পদে উপস্হিতি স্বাক্ষর করান। এ বিষয়ে ইউ,আর,এইচ,এস উচ্চ বিদ্যালয়ের অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক উত্তম কুমার দাস বলেন,আমি ব্যস্ত আছি,পরে কথা বলবো। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শাহজাহান আলী শেখ জানান,এমপিওভুক্ত বিদ্যালয়ের জনবল কাঠামো নীতি অনুসরণ করে যথাযথ ভাবে সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে এ নিয়োগ বোর্ড গঠন করা হয় এবং এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সর্বোচ্চ মেধাবী প্রার্থীকে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে। তবে সার্বিক বিষয়ে দায়িত্বে ছিলেন ডিজির প্রতিনিধি পাইকগাছা সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ খালেকুজ্জামান। নিয়োগ কমিটির ডিজির প্রতিনিধি পাইকগাছা সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ খালেকুজ্জামান বলেন , প্রার্থীদের কে আমি চিনি না। প্রধান শিক্ষক প্রার্থীদের ভালো চেনেন। ফ্রক্সি দিয়ে ফরম পূরনের ব্যাপারটা তিনিই ভালো জানেন।