জান্নাতুল বিশ্বাস.নড়াইল॥ নড়াইলে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামী মোঃ হেদায়েত হোসেনকে মৃত্যুদন্ড আদেশ দিয়েছেন আদালত। নড়াইলের অতিরিক্ত জেলাও দায়রা জজ মোঃ কেরামত আলী ১৪অক্টোবর (সোমবার) সকালে এ দন্ডাদেশ প্রদান করেন। মৃত্যুদÐ ছাড়াও আসামিকে ১০হাজার টাকা জরিমান করা হয়েছে। আসামি পলাতক থাকায় তার অনুপস্থিতিতেই আদালত এ দন্ড দেন। মামলার অন্য দুই আসামীকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে।
মামলার বিবরণে জানাগেছে, মোঃ হেদায়েত হোসেন নামে দন্ডপ্রাপ্ত আসামী নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার পদ্মবিলা গ্রামের মৃত গোলাম রব্বানী শেখের ছেলে। পেশায় কসাই হেদায়েত তার দ্বিতীয় স্ত্রী আঞ্জু আরার প্ররোচনায় ২০১২সালের ৩ ফেব্রুয়ারি প্রথম স্ত্রী মমতাজ বেগমকে রাতে কৌশলে বাড়ির অদূরে গম ক্ষেতে ডেকে নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে উপর্যুপরি কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে। ঘটনার পরে হেদায়তের কাপড়ে রক্ত লেগে থাকতে দেখে সন্দেহ হলে তাদের ছেলে রবিউল বাদি হয়ে পরদিন ৪ ফেব্রæয়ারি বাবা হেদায়েতের বিরুদ্ধে মাকে হত্যার অভিযোগ এনে মামলা করে। লোহাগড়া থানায় দায়ের কৃত এ মামলায় বাদি রবিউল তার বাবা ছাড়াও সৎমা আঞ্জুআরা এবং হত্যায় সহযোগিতা করায় মুকুল সিকদারের স্ত্রী জাহানার ও তাদের মেয়ে স্বাধীনাকে আসামী করে । এদিকে ঘটনার পর হেদায়েত গাঢাকা দেয়। পরে পুলিশের জালে ধরা পড়ে প্রাথমিক জিঞ্জাসাবাদে পুলিশের নিকট স্ত্রী মমতাজকে হত্যার কথা স্বীকার করে। পরে তাকে আদালতে তোলা হলে সেখানেও হেদায়েত নিজের দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়।
এ অবস্থায় পুলিশ তদন্ত শেষে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে হেদায়েত ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী আঞ্জুআরা ও ছোট ভাই খলিলের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়ার পাশাপাশি হত্যায় জড়িত থাকার প্রমাণ না পেয়ে অব্যাহতি দেয়া হয় এজাহার নামীয় জাহানারা ও স্বাধীনাকে।
এদিকে বিচারিক প্রকৃয়াচলা কালে আসামী হেদায়েত আদালত থেকে জামিনে মুক্ত হয়ে কিছুদিন পরে পালিয়ে যায়। ফলে তার অনুপস্থিতিতেই দীর্ঘ বিচারিক প্রকৃয়া চলাকালে মোট ১৪জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহনসহ আনুসঙ্গিক প্রমানাদী বিচারবিশ্লেষন শেষে আসামি হেদায়েতের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সন্দেহাতিতভাবে প্রমান হলে সোমবার রায়ের ধার্য দিনে তাকে ফাঁসী ছাড়াও অর্থদন্ডে দন্ডিত করা হয়।
অপর দিকে গৃহবধু মমতাজ হত্যাকান্ডে অপর দুই আসামি সম্পৃক্ততার প্রমান না পাওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষ এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।