মোঃ ফিরোজ আহমেদ, পাইকগাছা : খুলনার পাইকগাছা উপজেলার চাঁদখালীর উওর গড়ের আবাদে নৌর নদীর উপর বাঁশের সাঁকোটি যেন এক মরণ ফাঁদ। স্থানীয় সরদার বাড়ি জামে মসজিদের সামনের এ সাঁকোটি পার হয়ে প্রতিদিন শত শত মানুষ পূর্ব গজালিয়ার ইটের রাস্তা হয়ে উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকায় যাতায়াত করেন। তবে ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো পারাপারে বর্তমানে জনমানুষের ভোগান্তি চরমে পৌছেছে। বিশেষ করে চলতি বর্ষা মৌসুমে গ্রামের অনেক গাড়ী চালক, মটর ভ্যান, নসিমন, করিমন, পাঁকা রাস্তার উপর ফেলে রেখে অথবা অপর প্রান্তের অন্যের বাড়িতে রেখেই বাড়িতে ফিরতে হয়।
স্থানীয়রা জানান, উওর গড়ের আবাদের আয়তন প্রায় ৫কি:মি:। গ্রামটিতে প্রায় দু’হাজারেরও বেশি মানুষের বসতি। অথচ সেখানে নেই কোন সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ৪টি মসজিদ, ২টি ঈদগাহ ও ২টি কওমী মহিলা মাদ্রাসার অবস্থান সেখানে। প্রতিদিন সহজ পথে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌর নদীর উপর নির্মিত মরণ ফাঁদ পার হয়ে সেখানকার কোমলমতি শিক্ষার্থীরা পূর্ব গজালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠ নিতে যায়। শুষ্ক মৌসুমে শিক্ষার্থীদের অনেকে বাদুড়িয়া ব্রীজ হয়ে অথবা চৌহমুনি বাজার ঘুরে ১/২কিলো পথ পায়ে হেঁটে স্কুলে যাতায়াত করে।
সরেজমিনে জানাযায়, গত কয়েক বছর আগে প্রথমে গ্রামের মানুষের সার্বিক সহযোগীতায় মসজিদের সামনে বাঁশের সাঁকোটি নির্মাণ করা হয়েছিল। এর ২/৩ বছরের মধ্যে সাঁকোটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় স্থানীয়দের ভোগান্তির আর অন্ত থাকেনা। এরপর চাঁদখালীর সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জোয়াদুর রসুল বাবুর সময় সরকারি বরাদ্ধে স্থানীয় সাবেক ওয়ার্ড সদস্য আককাজ ঢালী কিছু পাকা পিলার ও কাঠের তকতা দিয়ে ফের সেখানে একটি সাঁকো নির্মাণ করেন। তাও পরবর্তী তিন বছরে নষ্ট হয়ে যায়।
ঠিক এমন পরিস্থিতিতে ফের দায়িত্ব বর্তায় স্থানীয় গ্রামবাসীর কাঁধে। তারা কোনরকম সাঁকোটির সংষ্কার করে যাতায়াত ব্যবস্থা চালু রাখলেও বর্তমানে তা চলাচলের সম্পূর্ণ অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা কাশেম সরদার বলছিলেন, গ্রামবাসীদের ঐকান্তিক সহযোগিতায় একাধিকবার সাঁকোটির নির্মাণ ও সংষ্কার হলেও দীর্ঘ দিন তদারকির অভাবে বাঁশগুলো পানিতে পঁচে নষ্ট হয়ে গেছে। এসময় তিনি গুরুত্ব বিবেচনায় নৌর নদীর উপর সরকারিভাবে স্থায়ী ব্রীজ নির্মাণের দাবি করেন।
স্থানীয় ওয়ার্ড সদস্য নজরুল সরদার বলেন, তিনি বিষয়টি ইউপি চেয়ারম্যানকে জানিয়েছেন। তবে এ মূহুর্তে পরিষদের তেমন কোন বরাদ্দ নাথাকায় তিনি কিছুই করতে পারছেননা। তবে আগামীতে নতুন বাজেটে সেখানে একটি টেকসই সাঁকো নির্মাণের আশ্বাস দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহেরা নাজনীনের ব্যবহৃত মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার সংযোগ পাওয়া যায়নি।