সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি॥ সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বড়দল উত্তর ইউনিয়নের মাহারাম ও শান্তিপুর সংলগ্ন নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোল,কপাল পুড়ছে চার উপজেলা, বালু খেকোরা সরকারের ইজারার বাহিরে গিয়ে রাতের অন্ধকারে প্রশাসনকে ফাঁকি দিয়ে, অনেকদিন যাবত ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করতেছে একটি প্রতাপশালী চক্র।
এখন পর্যন্ত উপর মহল থেকে বালুখোরদের অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আসেনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একশ্রমিক জানান, আমতৈল, মাটিকাটা, হাঁপানিয়া, বিন্নারবন্দ ও লেদারবন্দ গ্রামে উত্তর পাশের হাওর দিয়ে প্রতি রাতে ছোট ছোট স্টিলের শতাধিক নৌকা দিয়ে পার্শ্ববর্তী শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের ডাম্পের বাজার সংলগ্ন পাটনাই নদীতে বড়,বড়, বলগেট নৌকা লুট করে দেশের বিভিন্ন এলাকাতে যাচ্ছে।
ওই নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ না হলে তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, ধর্মপাশা ও মধ্যনগরসহ ঐ চারটি উপজেলার ভাটি অঞ্চলের ছোট বড় ২৩ টি হাওর চৈত্র মাসেই আগাম পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে যাবে। মাহারাম নদীতে এক সময় বর্ষাকালে প্রবল স্রোত হতো।
১৯৮৮ সালের পূর্বে চৈত্র-বৈশাখ মাসে নদীতে পানি এলে অকাল বন্যায় উপজেলার মাটিয়ান, সমসাসহ ভাটি অঞ্চলের ছোট-বড় ২৩টি হাওর পানিতে তলিয়ে যেতো।
তখন স্থানীয়দের সহযোগিতা ও উপজেলা পরিষদ থেকে অকাল বন্যার হাত থেকে ফসল রক্ষার জন্য মাহারাম নদীতে বেড়িবাঁধ দেয়া হতো।
একপর্যায়ে ১৯৮৮ সালের ভয়াবহ বন্যায় পাহাড় থেকে নেমে আসা বালু ও নুড়িপাথরে স্তূপে মাহারাম নদীটি প্রাকৃতিক ভাবে ভরাট হওয়ায় উজান থেকে পানি এসে হাওর তলিয়ে যাওয়ার দৃশ্যটি পাল্টে যায়।
প্রাকৃতিক ভাবে বালু বাঁধ সৃষ্টি হওয়ায় বিগত ৩৩ বছর ধরে মাহারাম নদীতে সরকারি খরচে আর বেড়িবাঁধ দিতে হচ্ছে না।
আরও জানা যায়, ভারতের মেঘালয় থেকে আসা সীমান্ত নদী জাদুকাটার পশাকা মাহারাম নদীতে এসে মিসেছে।
নদীতে বালু উত্তোলন যদি অব্যাহত থাকে চারটি উপজেলার ভাটি অঞ্চলের চৈত্র মাসেই ভারত থেকে নেমে আসা, জাদুকাটা নদীর আগাম পাহাড়ি ঢলের পানি ওই নদীতে এসে তলিয়ে যাবে ভাটি অঞ্চলের বোরো ফসল।
নদীতে বালু উত্তোলন হলে নদীর গভীরতা বেড়ে যাবে এবং নিঃস্ব হয়ে যাবে ভাটি অঞ্চলের লক্ষ লক্ষ কৃষক।
এসব ছোট ছোট ইঞ্জিন চালিত স্টীলবডি নৌকার শব্দ দূষণে মাহারম থেকে ডাম্পের বাজার পর্যন্ত এসব এলাকার আশপাশের লোকজন রাতে ঘুমাতে পারছে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে, তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সূপ্রভাত চাকমা বলেন, বালি উত্তোলনের নেয়ার সংবাদ পাওয়ার পর থেকেই পুলিশের সহযোগিতায় মাহারাম নদীতে অভিযান চলছে। এ অভিযান নিয়মিত চলমান থাকবে।