নিজস্ব প্রতিবেদক বাবলু মিয়া॥ ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে চিহৃিত সুদে ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ইসলাম, সফি উদ্দিন ও আইনাসী’র খপ্পরে পরে সর্বশান্ত চিকিৎসায় প্রধানমন্ত্রীর অনুদান প্রাপ্ত সুমন হোসেন।
উপজেলার সাফদারপুর ইউনিয়নের কন্যানগর গ্রামের আবুল কাশেমের স্ত্রী মোছাঃ সাবিনা বেগম (৫০) থানার অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করেন, আমার ছেলে মোঃ সুমন হোসেন (৩৫) কাঁচামালের ব্যবসা করত। গত ৪ বছর আগে আমার ছেলে সড়ক দুর্ঘটনায় শরীরের বামপাশ মারাত্মকভাবে জখম হয়। তার চিকিৎসা করাতে গিয়ে অনেক টাকা ব্যায় হয়। এলাকাবাসীর কিছুটা আর্থিক সহযোগিতা ও সরকারি অনুদান হিসেবে ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা পেয়েছি। তাতেও চিকিৎসা শেষ হয়নি। উপায় না পেয়ে সাপ্তাহিক সুদে হাজারে ১০০/-প্রতিদিন উল্লেখ করে সাদা ষ্ট্যাম্প ও আমার ছেলের নিজ স্বাক্ষরিত ব্যাংকের চেক তাদের কাছে জমা রেখে মোহাম্মদ ইসলামের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা, সফি উদ্দিনের কাছ থেকে ৮০ হাজার টাকা, আইনাসীর কাছ থেকে ৮০ হাজার। সর্বমোট ২ লক্ষ ১০ হাজার টাকা সুদ করে নেয়। প্রতি সপ্তাহে আমি তাদেরকে ২১ হাজার সুদ দিতে থাকি। শর্ত হিসেবে ২ বছর চালানোর পর আমার মাঠান জমি ৩০ কাঠা ও বাড়ি করার জন্য ৮ গাড়ী ইট, ২ গাড়ী বালি ও ১০০ বস্তা সিমেন্ট বিক্রি করে সুদের টাকা তাদেরকে দিতে থাকি। এ পর্যন্ত প্রায় ২০ লক্ষাধিক টাকা দিয়েছি। তবুও আসল টাকার জন্য মোহাম্মদ ইসলাম, সফি উদ্দিন, আইনাসী আমার বাড়িতে এসে বিভিন্ন ধরনের হুমকি ধামকি দিয়ে চলেছে। এই সুদে ব্যবসায়ীদের কারণে আমরা ভয়ে দিন কাটাচ্ছি। আমরা সুদখোরের হাত থেকে বাঁচতে ঝিনাইদহ পুলিশ সুপার মহোদয় ও কোটচাঁদপুর অতিরিক্ত সার্কেলের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এ বিষয়ে সাংবাদিক’রা অনুসন্ধানে যান সাফদারপুর বাজারের মাছ ব্যবসায়ী মোঃ শফি উদ্দীন এর কাছে। তিনি অভিযোগ স্বীকার করে বলেন, আমি সুমনের টাকা দিয়েছি ১ বছর আগে ৯৫,০০০ হাজার টাকা এই টাকা বাবদ আমাকে কোন সুদ দেননি কিন্তু আমি যে টাকা দিয়েছি তার বাবদ আমার কাছে একটি সাদা স্ট্যাম্প, বেলাইন চেক ও মোটরসাইকেল এর কাগজ আছে। এগুলো সাংবাদিক’রা দেখতে চাইলে তিনি বলেন, কোটচাঁদপুর আছে পরে দেখাবো।
যাওয়া হয় সাফদারপুর বাজারের চায়ের দোকানী সুদে ইসলাম উদ্দীন এর কাছে। জানতে চাওয়া হয় কন্যানগর গ্রামের সুমন নামের একজন আপনার কাছ থেকে সুদে টাকা নিয়েছে ৫০,০০০ হাজার টাকা। তিনি বলেন, না আমার কাছ থেকে কোন সুদে টাকা সুমন নেইনি। জানতে চাওয়া হয় সুমনের সাদা স্টাম্প ও বেলাইন চেক আছে কিনা বলেন ? তিনি বলেন, না আমার সাথে সুমনের কোন লেনদেন নেই। আমি সুমনের কাছে আমার দোকান বাকির টাকা পাবো ৯ হাজার তাছাড়া কোন টাকা চেক ও স্টাম্প নেই। কিন্তু কথার শেষে স্বীকার করেন হ্যা সুমনের চেক ও স্টাম্প আমার কাছে আছে।
যাওয়া হয় আর এক সুদে কারবারি আইনাসির বাড়িতে। তাকে না পাওয়ায় দেখা হয় তাঁর জামাই সাহাবুদ্দিন ও মেয়ের সাথে। জানতে চাওয়া হয় কন্যানগর গ্রামের সুমনের কাছে সুদে বাবদ টাকা দিয়েছেন এটা কতোটুকু সত্য। আইনাসির মেয়ে বলে হ্যাঁ আমরা টাকা দিয়েছি সত্য কিন্তু টাকাটা আমাদের না টাকাটা আমরা কাওসার ভানু স্বামী মোঃ লেগবার হোসেন এর কাছ থেকে ১ লাখ টাকা নিয়েছি প্রতিমাসে ২০,০০০ হাজার করে সুদ দিতে হবে কাওসার ভানুকে। তবে ওই এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি বলেন, এঁদের কাজই সাফদারপুর ইউনের বিভিন্ন গ্রামে নিরীহ সহজ সরল মানুষ দেখে খুঁজে সাদা স্টাম্প ও চেকের মাধ্যমে সুদে টাকা দিয়ে নিঃস্ব করা এবং অনেকে নিঃস্ব হয়েছে ও এলাকার বাইরে আছে। এই সুদে কারবারি দের অত্যাচারে কেউ কেউ আত্মহত্যা ও করেছেন। আবার ভিটে বাড়ির জমি পর্যন্ত লিখে নিয়েছে।
সুদে কারবারিদের হাত থেকে সাফদারপুর ইউনিয়নের সুধী সমাজ এর প্রতিকার চান আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে।
এবিষয়ে কোটচাঁদপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মঈন উদ্দিন জানান, অভিযোগ পেয়েছি, বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।